মঙ্গলবার, ২৪ এপ্রিল, ২০১২

খিলাফত প্রতিষ্ঠায় মুসলিম সেনাবাহিনীর ভূমিকা পর্ব-১

খিলাফাহ ম্যাগাজিনে প্রকাশিত একটি প্রবন্ধ

ভূমিকাঃ
২০০৭ সালে যখন চার দলীয় জোট ক্ষমতা থেকে বিদায় নিচ্ছিল এবং আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট রাজপথে আন্দোলন করছিল, তখন বাংলাদেশের আপামর মুসলিম জনগণ হাসিনা-খালেদার পরিবর্তে একটি বিকল্প রাজনীতির ধারার জন্য অপেক্ষা করেছিল। এক-এগারোর সরকার এ প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। পরবর্তীতে রাজনৈতিক সংস্কারের নামে ক্ষমতায় বসানো হয় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট সরকারকে। মাত্র কয়েকদিনের মাঝেই ভারতীয় চক্রান্তে পিলখানা হত্যাকান্ডে সরকারের মদদ থেকে শুরু করে অতি সম্প্রতি ভারতীয় প্রেসিডেন্ট প্রতিভা পাতিল কর্তৃক শেখ হাসিনাকে ক্রুসেডার উপাধি প্রদান, পরিবর্তনের এ সরকারের প্রকৃত চেহারা উন্মুক্ত করেছে। এ চিত্র শুধু বাংলাদেশেরই নয় বরং সারা মুসলিম বিশ্ব জুড়ে একই অবস্থা। প্রায় ১০ বছরের সামরিক শাসনের পর পাকিস্তানের আসিফ জারদারীর গণতান্ত্রিক সরকার প্রকৃত অর্থে মুসলিমদের সাথে এক বিশ্বাসঘাতকার নাম। যাকে কাফের সাম্রাজ্যবাদী ক্রুসেডার মার্কিন-বৃটেনের দালাল ছাড়া আর কিছুই বলা যায় না। একইভাবে ২০০৭ সালে গাজার গণহত্যার সময় মিশরের প্রেসিডেন্ট হোসনী মোবারকের ভূমিকা, যাতে সে ইসরাইলের আগ্রাসন থেকে বাঁচার জন্য ফিলিস্তিনের নিরীহ মুসলিমরা ‘রাফা’ সীমান্ত দিয়ে মিশরে প্রবেশের সময় সেনাবাহিনী দিয়ে বাঁধা প্রদান করতে চাইলে মিশরীয় সেনাবাহিনী তাতে অপারগতা প্রকাশ করে। পরিণামে হোসনী মোবারক বেশ কিছু উর্ধ্বতন সেনা অফিসারদের বরখাস্ত করে। আর তাছাড়া আমরা জানি আফগানিস্তানের হামিদ কারজাই, ইরাকের নূরে-আল মালিকী, সৌদি রাজা আব্দুল্লাহ সহ অসংখ্য মুসলিম শাসকদের কথা, যারা রসুল (সা) কে পরিত্যাগ করেছে, যখন ইউরোপ বিকৃত কার্টুন ছেপে আমাদের প্রিয় নবী (সা) এর অবমাননা করেছে। তারা কুর’আনকে পরিত্যাগ করেছে যখন মার্কিনীরা পবিত্র কুর’আনকে টয়লেটে ফ্লাশ করেছে। তারা ডঃ আফিয়া সিদ্দিকীর মত বোনদের পরিত্যাগ করেছে যখন মার্কিনীরা তাকে গত ৭ বছর ধরে ধর্ষণ করে তারপর ৬০ বছরের জেল প্রদান করেছে। একটু চিন্তা করুন যখন শেখ মুজিবকে কটাক্ষ করে কবিতা লেখা হয়, তখন ঐ লেখককে খুঁজে বের করে শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়। তার ফাঁসির ব্যবস্থা করার জন্য আন্দোলন করা হয়। অথচ যেসব দেশ রসুল (সা) কে অপমান তাদের নেতাদের সফর উপলক্ষ্যে তৈরী করা হয় লাল গালিচা সংবর্ধনা, তাদেরকে ডাকা হয় ‘বন্ধু’ হিসেবে। যখন কোনও এক দলের নেতা খুন করে তার বদলা নেয়া হয়। অথচ বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামে মুসলিমদের বিরুদ্ধে পরিচালিত এ অন্যায় যুদ্ধে লক্ষ লক্ষ মুসলিম নিধনের ব্যাপারে তাদের শুধু নিরবতাই নয়, বরং মুসলিমদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে এসব কাফের মুশরিকদের মুসলিম সেনাবাহিনী, ভূমি, সম্পদ ও জনবল ব্যবহার করতে দিয়ে কাফেরদের সাহায্য করা মুসলিম, ইসলাম, কুর’আন, রসুল (সা.) এবং সর্বোপরি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার সাথে গাদ্দারীর সমান।

মুসলমি বিশ্ব আজ সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটেন-মার্কিনীদের “Divide and Rule” পলিসির কার্যকারীতা ও আমাদের মেরুদন্ডহীন দালাল শাসকগুলোর কল্যানে ৫৭ টি’র মত ভূখন্ডে বিভক্ত। আজকের মুসলিম বিশ্ব অর্থনৈতিক দিক হতে পশ্চাদপদ। পশ্চিমা কাফের মুশরিকরা মুসলিমদের সম্পদ, সম্মান লুণ্ঠনের জন্য কখনো বা একে অপরকে ডাকছে এবং কখনোবা প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হচ্ছে। ১৯২৪ সালে খিলাফত ব্যবস্থা পতনের পর, স্বৈরাচারী, রাজতান্ত্রিক, সামরিক এবং সর্বশেষ গণতান্ত্রিক পুঁজিবাদী ব্যবস্থা মুসলিম বিশ্বকে একটি বিভক্ত ও পদানত জাতিতে পরিণত করেছে। প্রকৃত অর্থে, মুসলিমদের জীবনে কোনও পরিবর্তন আসেনি। আর তাই যারা বারবার একই ব্যবস্থাপত্র দেন (গ্রহণ করেন), অথচ ভিন্ন ফল আশা করেন, তাদেরকে চিন্তার দিক থেকে দেউলিয়াগ্রস্থ ছাড়া আর কিছুই বলা যায় না।

রসুল (সা) এর জীবনীই একমাত্র আদর্শঃ
আমরা সবাই আমাদের সমাজের পরিবর্তন চাই। সমাজে পরিবর্তনও এসেছে। বাকশাল গিয়ে সামরিক শাসন এসেছে। সামরিক শাসনের পর স্বৈরশাসন এসেছে। স্বৈরশাসনের পর গণতন্ত্র এসেছে। গণতন্ত্রের পর আবার এসেছে পশ্চিমা ধাঁচের শিক্ষিতদের তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থার শাসন। তারপর এসেছে জেলের মাঝে থেকে পাপমুক্ত হওয়া আসামীদের আবারও সেই গণতন্ত্র। কিন্তু একটি জিনিস বদলায়নি। আর তা হল সাধারণ মুসলিমদের ভাগ্য। বরং পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। আগে মানুষ জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে শংকিত ছিল, এখন দেশের নিরাপত্তা নিয়ে শংকিত। তাই আমরা যারা বিশ্বাস করি যে, ইসলাম এক শ্বাসত জীবন ব্যবস্থা, এটি কোনও কালের জন্য নয় বরং পৃথিবীর শেষ সময় পর্যন্ত এর সমাধান, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালায় বিশ্বাসী, বুদ্ধিমান মানুষের জন্য এটিই একমাত্র গ্রহণযোগ্য সমাধান। আর তাই তাদের জন্য ইসলামী খিলাফত ব্যবস্থাই একমাত্র গ্রহণযোগ্য ব্যবস্থা। আর আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেন,

“নিঃসন্দেহে আল্লাহর নিকট একমাত্র গ্রহণযোগ্য জীবন ব্যবস্থা হচ্ছে ইসলাম... ” [সূরা আল মায়েদা: ১৯]

যেহেতু আমরা খিলাফত প্রতিষ্ঠায় ক্ষমতার অধিষ্ঠিত ব্যাক্তিদের ভূমিকার ব্যাপারে আলোচনা করছি আর তাই আমাদের রসুল (সা) এর জীবনীতে ফিরে যাওয়া উচিত। যাতে করে আমরা খিলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পদ্ধতির ব্যাপারে এমন একটি সুস্পষ্ট ধারণা লাভ করি যা খিলাফত প্রতিষ্ঠায় সফলতা পেয়েছে। তাছাড়া রসুল (সা) রসুল (সা.) এর জীবনেই রয়েছে আমাদের জন্য উত্তম আদর্শ। তাছাড়া রসুল (সা) যেহেতু এই পৃথিবীতে একবারই এসেছেন, এবং একবারই ইসলামী খিলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছেন (আজকের নেতাদের মত কোনও গণতান্ত্রিক সমাজ তৈরী করেননি, তৈরী করেননি কোনও সেক্যুলার সমাজ!)। আর তাই খিলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে একাধিক পদ্ধতি থাকা অসম্ভব। এটি তখনই সম্ভব হত যদি রসুল (সা) একাধিকবার একাধিক উপায়ে খিলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতেন।

রসুল (সা) ৬১০ সালে নবুয়্যত প্রাপ্তির পর থেকে ৬২৩ সালে মদিনায় প্রথম ইসলামী খিলাফত প্রতিষ্ঠা পর্যন্ত সুদীর্ঘ ১৩ বছরের জীবনে তিনি যেসকল কাজ করেছেন তারই ধারাবাহিকতায় আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার অনুগ্রহে মদিনাতে ইসলামী খিলাফত ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়। যা মানব জাতিকে এনেছে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে। এ দীর্ঘ সময়ে রসুল (সা) অনেক কাজ করেছেন। যার মাঝে কিছু কাজ আছে যা একজন ব্যাক্তি হিসেবে তিনি তা সম্পন্ন করেছেন। যেমন তিনি খেয়েছেন, তিনি ঘুমিয়েছেন, তিনি বিবাহ করেছেন। এসব কাজের মাঝে অনেক কিছুই আছে যা আমাদের জন্য অনুকরণীয়। কিন্তু এগুলো ইসলামী খিলাফত প্রতিষ্ঠার সাথে সম্পর্কিত নয়। আবার তিনি খিলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য যা যা করেছেন তার মাঝে কিছু কাজ তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আগে করেছেন, আর কিছু কাজ তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কাজগুলোর মাঝে ধারাবাহিকতা রাখা প্রয়োজন। রসুল (সা) এর খিলাফত প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে তিনটি ধাপে বিভক্ত করা হয়ে থাকে।

প্রথমত: গোপনে দাওয়াত ও দল গঠন পর্যায়।

দ্বিতীয়ত: সমাজের প্রচলিত মানব রচিত নিয়ম-কানুন, রীতি-নীতি, আচার-অনুষ্ঠানের বিরুদ্ধে বুদ্ধিবৃত্তিক এবং রাজনৈতিক আন্দোলনের মাধ্যমে জনমত তৈরীর প্রচেষ্টা। যেমন শিরক, সুদ, ব্যভিচার, নারীদের সাথে অন্যায় ব্যবহার, লেনদেনে অসততা, অন্যের সম্পদ ভক্ষণ, নেতৃত্ব স্থানীয় ব্যাক্তিদের স্বেচ্ছাসারিতা, মানব তৈরী আইন ইত্যাদির বিরুদ্ধে বুদ্ধিবৃত্তিক এবং রাজনৈতিক আন্দোলন পরিচালনা।

তৃতীয়ত: মক্কায় রসুল (সা) এর দল নিষিদ্ধ হয়ে, সিয়াবে আবু তালেবে অবস্থানকালে মক্কার পার্শ্ববর্তী এলাকায় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত গোত্র প্রধান ও প্রভাবশালী ব্যাক্তিবর্গের নিকট ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য নুসরাহ (সমর্থন) প্রাপ্তির চেষ্টা এবং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার অনুগ্রহে মদিনায় আনসারদের সহযোগিতায় প্রথম খিলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। আলোচ্য নিবন্ধে তৃতীয় তথা শেষ ধাপ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।

মদিনায় প্রথম খিলাফত প্রতিষ্ঠায় রসুল (সা) কে আনসারদের গোত্র প্রধান ও সেনাপতিদের নুসরাহ্ (সমর্থন) প্রদানঃ
রসুল (সা) মক্কায় তার সর্বশক্তি দিয়ে ইসলামী খিলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য বুদ্ধিবৃত্তিক এবং রাজনৈতিক আন্দোলন পরিচালনা করেন। রসুল (সা) এর প্রচেষ্টা এবং সুস্পষ্ট পথনির্দেশনা এমন ছিল যে, তা পরবর্তী যুগে খিলাফত প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে নিয়োজিতদের জন্য এক অবশ্য অনুকরণীয় হয়ে আছে। নবুয়্যতের ১০ম বছরে রসুল (সা) ও তাঁর দল [সাহাবা (রা.)] ব্যাপক পরীক্ষার সম্মুখীন হন। রসুল (সা) এর চাচা আবু তালিব মারা যান। যিনি রসুল (সা) কে এক ধরণের নিরাপত্তা প্রদান করে আসছিলেন। তাছাড়া মক্কার কাফের ও মুশরেকরা নবীজি (সা) ও তাঁর দলকে মক্কায় নিষিদ্ধ ঘোষণা করে, মক্কা থেকে বিতাড়িত করে শিয়াবে আবু আলেবে এক ধরণের বন্দীদশায় প্রেরণ করে। এ ঘটনার পূর্বে রসুল (সা) মোটামুটি নিরাপত্তার মাঝেই ইসলামের দাওয়াত প্রচার করছিলেন। কিন্তু এখন তিনি অনুধাবন করলেন যে, মক্কার সমাজ এ বাণীকে ঐভাবে গ্রহণ করেনি। না মক্কার জনসাধারণের মাঝে এটি কোনও ধরণের স্থায়ী জনমত তৈরি করতে পেরেছে। আর এই অবস্থাই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা রসুল (সা) কে নুসরাহ (সাহায্য বা সমর্থন) আদায়ের দিকে মনোনিবেশ করার আদেশ দেন। নুসরাহ্ শব্দটি একটি আরবী শব্দ। এখানে নসর শব্দের অর্থ হল অন্যায় অত্যাচারের শিকার ও নির্যাতিতের সাহায্য করা এবং আনসার শব্দের অর্থ হল সে গ্রুপ বা দল যারা অত্যাচারের শিকার ও নির্যাতিতের সাহায্য করে। একটি ক্রিয়া ও অপরটি কর্তা।

সিরাতে ইবনে হিশামে বর্ণিত আছে যে, ইবনে ইসহাক বলেন, ‘যখন আবু তালেব মারা যান, তখন মক্কার কোরাইশরা রসুল (সা.) ও সাহাবা এর উপর অবর্ণনীয় অত্যাচার শুরু করে। রসুল (সা) এই পরিস্থিতিতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার নির্দেশে ইসলামের প্রতি সমর্থন আদায় এবং নিরাপত্তার জন্য তায়েফ গমন করেন। রসুল (সা.) তাঁর পালিত পুত্র যায়েদসহ একাই তায়েফে গমন করেন এবং তাদের কাছে ইসলামকে উপস্থাপন করেন। ইবনে হাজারের ফাতাহ উল বারী, তুহফাত উল আহওয়াদী, আল কওয়ালাম এবং আল হাকিমে ইবনে আব্বাস (রা) হতে বর্ণিত, এবং আবু নূয়াইম এবং বায়হাকীতে নির্ভরযোগ্য সূত্রে আলী ইবনে আবি (রা) তালিব রাসুল (সা) কে আরবের বিভিন্ন গোত্র প্রধানদের কাছে ইসলামের বাণী নিয়ে যাবার আদেশ দিলেন তখন আমি ও আবু বকর রাসুল (সা) কে মিনা পর্যন্ত বিভিন্ন গোত্রের কাছে পৌঁছে দিলাম।

আলী ইবনে আবু তালিব কর্তৃক বর্ণিত উপরোক্ত হাদিস অনুযায়ী এটা প্রতিষ্ঠিত যে, আরবের গোত্রসমূহের কাছে নুসরাহ্ (সমর্থন) প্রদানের আহবান এই আহবানের সময় আল্লাহ সুবহানাহ ওয়া তায়ালা কর্তৃক নির্ধারিত। ইসলামকে ক্ষমতার আসনে অধিষ্ঠিত করে শারী’আহ্’র পরিপূর্ণ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা ঐ নির্দেশিত সময়ে রসুল (সা.)কে নুসরাহ্ (সমর্থন) আদায়ের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

রসুল (সা.) তাঁর এ দায়িত্ব শুরু করেন মক্কার পাশে অবস্থিত তায়েফ গোত্র থেকে। তায়েফ গোত্র ছিল তৎকালীন আরবের অন্যতম শক্তিশালী গোত্র। এরা ক্ষমতা, প্রভাব, সম্মান এসব দিক থেকে মক্কার কোরাইশ গোত্রের সমতূল্য ছিল। মক্কার নেতা ওয়ালিদ বিন মুগিরার বক্তব্য থেকে তা সুস্পষ্টভাবে বোঝা যায়, যখন সে কোরআনকে অস্বীকার করে বলে যে, কেন এই গ্রন্থ মক্কা বা তায়েফের কোনও সম্ভ্রান্ত ব্যাক্তির উপর নাযিল হয় নি?

রসুল (সা.) মক্কা থেকে তায়েফ গমন করেন এবং সেখানে তিনি তায়েফের গোত্র প্রধানদের কাছে ইসলামকে তুলে ধরেন, ইসলাম গ্রহণ করে এর নিরাপত্তা বিধানের জন্য তাদেরকে আমন্ত্রন জানান। তারা আল্লাহর রসুল (সা) কে প্রত্যাখ্যান করে এবং তার উপর অত্যাচারের বোঝা চাপিয়ে দেয়। রসুল (সা.) তায়েফ থেকে ফিরে আসেন এবং মক্কার অদূরে আল মু’তিম ইবনে আদির বাসায় অবস্থান করেন। এটাই ছিল নুসরাহ্ গ্রহণের প্রথম প্রচেষ্টা। এটাই ইতিহাস। এটাই রসুল (সা.) এর শিক্ষা ও সুন্নাহ্।

চলবে ......

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন