নিঃসন্দেহে ঈমানদাররা সফল হয়েছে। যারা নিজেদের নামাজে একান্ত বিনয়াবনত। যারা অর্থহীন বিষয় (সকল পাপাচার, যা কিছু আল্লাহ নিষেধ করেছেন) থেকে বিমূখ থাকে। যারা যাকাত গ্রদান করে। যারা তাদের যৌনাঙ্গের হেফাজত করে। তবে নিজেদের স্ত্রী কিংবা অধিকারভূক্তদের(দাসী) ক্ষেত্রে (এটি প্রযোজ্য) নয়, (তাদের ক্ষেত্রে এটি হেফাজত করা না হলে) তারা কখনও নিন্দনীয় হবে না। অতঃপর এই বিধিবদ্ধ পদ্ধতি ছাড়া যদি কেউ অন্য কোনো পন্থায় তাদের যৌন কামনা চরিতার্থ করতে চায়, তবে তারা সীমা লঙ্ঘনকারী হিসেবে বিবেচিত হবে। যারা তাদের কাছে রক্ষিত আমানত ও প্রতিশ্রুতিসমূহের হেফাজত করে। যারা নিজেদের নামাজ সমূহের ব্যাপারে অধিক যত্নবান হয়। এই লোকগুলোই সেই উত্তরাধিকারী। যারা উত্তরাধিকারী হবে জান্নাতুল ফেরদাউসের এবং সেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে। (সূরা মুমিনুন:১-১১)
প্রত্যেক মানুষের ব্যাক্তিত্ব তার মানসিকতা (আকলিয়া)
এবং আচরণগত বিন্যাস (নাফসীয়া) এর সমন্বয়ে গঠিত। তার বাহ্যিকতা (দৈহিক গড়ন, আকৃতি, রূপ, বর্ণ) এবং এ সম্পর্কিত
অন্যান্য বিষয়াদী তার ব্যাক্তিত্বকে প্রকাশ করে না বরং তা শুধুমাত্র মেকী বিষয়, যে
কারো ক্ষেত্রে এ চিন্তাটি করার অর্থ দাড়াবে নেহায়েৎ অনর্থক।
যে
ব্যাপারটির সাহায্যে আমরা কোনো কিছু বুঝি তা হলো আমাদের মানসিকতা (আকলিয়া)। অর্থাৎ
কোনো বিষয় মানুষ বিচার করে স্থিরীকৃত মাপ কাঠি দিয়ে, যা সে বিশ্বাস করে এবং যার উপর
আস্থা রাখে। কোনো একটি বিষয় বিচার বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে তার চিন্তার ভিত্তি যদি ইসলামিক
আক্বিদার উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে তাহলে বলতে হবে যে, ব্যক্তিটির মানসকিতা (আকলিয়া)
ইসলামিক আর যদি তা না হয় তাহলে তা অবশ্যই ইসলামিক মানসকিতা (আকলিয়া) ব্যতীত ভিন্ন কিছু।
আচরণগত
বিন্যাস (নাফসীয়া) বিষয়টি হলো মানুষের প্রবৃত্তি এবং জৈবিক চাহিদা পুরণ করার একটি উপায়
বা পন্থা, যে পন্থায় মানুষ তাদের বিশ্বাস ও আস্থা অনুযায়ী সন্তুষ্ট হয়। যখন কারো সন্তুষ্টি
আসে ইসলামিক আক্কিদাকে ভিত্তি করে তখন বলা যায় যে সে একজন ইসলামিক নাফসীয়া সম্পন্ন
ব্যক্তি। যদি তা না হয় তবে বলতে হবে যে, তার নাফসীয়া ইসলাম ব্যতিত অন্য কিছু হতে নির্গত।
যদি
কোনো মানুষের মানসিকতা বা আকলিয়া ও আচরণফত বিন্যাস বা নাফসীয়া একই মাত্রা অনুযায়ী হয় তবে তার ব্যাক্তিত্ব হয়ে থাকে
স্বতন্ত্র ও নিয়ন্ত্রিত। যদি তার আকলিয়া এবং
নাফসীয়া এর ভিত্তি হয় ইসলামিক আক্কিদা, তাহলে তার ব্যাক্তিত্ব হবে ইসলামিক। অন্যথায়
তাকে ইসলামিক ব্যাক্তিত্ব বলা সঙ্গত নয়।
তাই
শুধুমাত্র এটাই যথেষ্ট নয় যে কারও আকলিয়া বা মানসিকতা শুধুমাত্র ইসলামিক বরং এর সাথে
তাকে যে কোনো বিষয় বা ঘটনাকে সঠিকভাবে শরীয়ার নিয়ম অনুযায়ী বিচার-বিশ্লেষণে যোগ্যতর
হতে হবে এবং সেইসাথে তাকে তথ্য বিশ্লেষণ করে যৌক্তিকভাবে সিদ্ধান্তে উপনিত হতে হবে।
তাকে হালাল ও হারাম সম্পর্কে জানতে হবে এবং সেই সাথে চিন্তায় ও সচেতনতার ক্ষেত্রে পরিণত
হতে হবে। একইসাথে তাকে জোরালো ও প্রভাবপূর্ণভাবে কথা বলার যোগ্যতা অর্জন করতে হবে সেই
সাথে যে কোনো বিষয়ের সঠিক ব্যাখ্যা করার যোগ্যতাও অর্জন করতে হবে। এমনকি এটুকুও যথেষ্ট
নয়; তাকে অবশ্যই ইসলামিক নাফসীয়ার অধিকারী হতে হবে, যেন সে তার প্রবৃত্তিগত ও জৈবিক
চাহিদাগুলো ইসলাম দ্বারা পুরণ করে। সে এমন এক ব্যক্তিত্ব হবে, যে সালাত কায়েম করে,
রোজা রাখে, নিজেকে পবিত্র করে, হজ্জ পালন করে, নিজেকে হালাল কাজে নিয়োজিত রাখে এবং
যাবতীয় হারাম থেকে নিজেকে বিরত রাখে। সে ঠিক তেমনি ভাবে চলে, যেভাবে আল্লাহ চান। সে
নিজেকে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার নিকটবর্তী করে তার প্রদত্ত বাধ্যবাধকতাগুলো মেনে
চলে; যা তিনি (আল্লাহ) তার (মানুষের) উপর অবশ্য পালনীয় করেছেন, সেই সাথে সে তীব্র আগ্রহ
নিয়ে নফল কাজগুলো করে আল্লাহর আরও নিকটবর্তী হবার জন্য। প্রতিটি বিষয়ে তার মনোভাব হবে
সত্যনিষ্ঠ ও দায়িত্বপূর্ণ ফলে সে সৎ কাজের পক্ষালম্বন করবে অসৎ কাজে নিষেধ করবে। সে
এমন একজন, যে কাউকে ভালোবাসে আল্লাহর উদ্দেশ্যেই এবং কাউকে ঘৃণা করে আল্লাহর উদ্দেশ্যেই।
আর সে মানুষের সাথে সু-আচরণ করে এবং উন্নত চরিত্রের পরিচয় দেয়।
একইভাবে
শুধুমাত্র ইসলামিক নাফসীয়া অর্জনই যথেষ্ট নয়, যদি তার সাথে ইসলামিক আকলিয়া সংযুক্ত
না থাকে। অজ্ঞতার পথে থেকে আল্লাহর আনুগত্য করলে তা মানুষকে ভ্রান্ত পথে নিয়ে যেতে
পারে। সে তখন এমন দিনে রোজা রেখে ফেলতে পারে, যেদিন রোজা রাখা নিষেধ এবং এমন সময় সালাত
আদায় করতে পারে যে সময় তা আদায় করা মাকরূহ। সে হয়তো কাউকে অশ্লীল কাজ করতে দেখলে পড়বে-“লা
হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ” যদিও এর পরিবর্তে তার উচিৎ ছিল উক্ত ব্যক্তিকে
জবাবদিহিতায় বাধ্য করা বা উক্ত খারাপ কাজে নিষেধ করা। সে হয়ত তখন অন্যায়ভাবে অর্থ উপার্জন
করে দান-সদকাহ করবে এবং দাবী করবে - সে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করেছে; যদিও সে পাপে জড়িয়ে
আছে। অন্য ভাবে বললে বলতে হয় - সে একটি খারাপ কাজ করেও মনে মনে ভাববে -একটি ভালো কাজ
করা হলো। সে তখন তার প্রবৃত্তি ও জৈবিক চাহিদাগুলো পুরণ করবে আল্লাহ ও তার রসূলের
(সাঃ) বিপরীত পথে থেকে।
ততক্ষণ
পর্যন্ত ব্যাক্তিত্ব পূর্ণতা পায়না, যতক্ষণ না তার আকলিয়া ইসলামিক হচ্ছে। তাই সে ঐসকল
বিষয়ের জ্ঞান রাখবে, যেগুলো পালন করা তার জন্য বাধ্যতামূলক। একইসাথে সে চেষ্টা করে
যাবে শরীয়াহ্’র নিয়ম-কানুন যতটা সম্ভব জেনে নিতে। এরসাথে তার ইসলামিক নাফসীয়াও থাকতে
হবে, যেখানে সে শরীয়াহ্’র নিয়মগুলো প্রয়োগ করবে, শুধু জানার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখবে
না। সমস্ত ব্যাপারেই তাকে এই নিয়ম-নীতিগুলোর প্রয়োগ ঘটাতে হবে চাই সেটা সৃষ্টিকর্তা
সম্পর্কিত হোক আর তার নিজের সম্পর্কিত অথবা অন্যান্যের সম্পর্কিত হোক।
যখন
সে তার মানসিকতা ও আচরণগত বিন্যাসকে ইসলাম অনুযায়ী নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে তখনই কেউ নিজের
ব্যক্তিত্বকে ইসলামিক দাবী করতে পারে এবং আল্লাহ ছাড়া আর কাউকে ভয় না করার ব্যাপারটি
তাকে পরিপূর্ণভাবে ভালো বা সত্যের দিকে ধাবিত করবে।
যাইহোক,
এ বক্তব্য এমনটা বলে না যে, এরপর ঐ ব্যাক্তির মধ্যে আর কোনো ত্রুটি-বিচ্যুতি ধরা পড়বে
না। বরং ব্যাপারটি এমন যে ঐসব ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলি যদি স্বাভাবিক চরিত্র না হয়ে (স্বতস্ফুর্তভাবে
না ঘটে) একটা আলাদা কিছু হয় (অসাবধানতা বশত ঘটে) তাহলে এটা কোনো অরাজকতা সৃষ্টি করবে
না। এটা এ কারণে যে, মানুষ ফেরেশতা নয়। সে ভুল করে এবং তার জন্য অনুতপ্ত হয় এবং ক্ষমা
চায় অতঃপর সে যা সঠিক তাই’ই করে। সে আল্লাহর প্রশংসা বর্ণনা করে, তাঁর মহত্ব, দয়া বর্ণনা
করে এবং পথ নির্দেশনা দান করে।
একজন
মুসলিম তার মানসিকতার মাঝে যতবেশী ইসলামিক সংস্কৃতির চর্চা ঘটায় এবং নিজের ইসলামিক মানুসিকতাকে শক্তিশালী
করার জন্য যতবেশী আল্লাহ নির্দেশিত কার্যাবলী সম্পাদন করতে থাকে তত বেশী এবং দ্রুত
সে ইসলামের মূল নির্যাসের দিকে ধাবিত হয়। এমনকি সে শুধু ইসলামের মূল ভিত্তির (মূল বিষয়)
উপর সুদৃঢ় হবে তাই’ই নয় বরং ধাপে ধাপে সে নিজের উত্তরণ ঘটাবে। এটা তখনই সম্ভব, যখন
সে একান্ত বিশ্বাস ও তীব্র প্রচেষ্টার মাধ্যমে নিজের জীবনকে সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করে
আখিরাতের কল্যাণের জন্য। সে তখন মসজিদের মেহরাবের যেমন সঙ্গী হবে তেমনি হবে জিহাদেরও
মহা-নায়ক এবং এটাই আল্লাহর দাসের সর্বশ্রেষ্ঠ বৈশিষ্ঠ্য। আল্লাহ মহা-পরাক্রমশালী, মহান
সৃষ্টিকর্তা এবং বিধানদাতা।
ইসলামী
ব্যক্তিত্বের ইসলামিক মানসিকতা ও নাফসীয়া বা আচরণগত বিন্যাসের অধিকারী হতে হবে। যার
ফলে একজন দাওয়াকারী যখন ইসলামী খিলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছে তখন আল্লাহর স্মরণে
তার কন্ঠ সর্বদা সিক্ত থাকবে। তার অন্তঃকরণ সর্বদা আল্লাহর ভীতিতে পরিপূর্ণ থাকবে,
আর তার অঙ্গ প্রত্যঙ্গসমূহ সর্বদা সৎ কাজের দিকে দ্রুত ধাবিত হবে। সে কুরআন আবৃত্তি
করে, সে অনুযায়ী চলে, ভালোবাসে আল্লাহ ও তাঁর রসূল (সাঃ) কে। সে আল্লাহর জন্যই কাউকে
ভালোবাসে এবং আল্লাহর জন্যই কাউকে ঘৃণা করে। সে আল্লাহর অনুগ্রহের আশা করে এবং আল্লাহর
শাস্তিকে ভয় করে। সে আখিরাতের মহা-পুরষ্কারের
আশায় চরম ধর্য্যশীল। সে চরম দায়িত্বশীল এবং আল্লাহর উপর নির্ভরশীল। সে সত্যের পথে সুদৃঢ়
অটল পর্বতের মত। মুমিনদের (বিশ্বাসী) প্রতি ব্যবহারে সে কোমল কিন্তু কাফিরদের (অবিশ্বাসী)
প্রতি সে আচরণে দৃঢ় ও কঠোর এবং আল্লাহর ব্যাপারে সে সবার প্রতিই ভয়শুণ্য। সে সত্যই
একটি উন্নত চরিত্রের অধিকারী। তার ভাষা খুবই শ্রুতিমধুর, সুন্দর, হৃদয়গ্রাহী কিন্তু
তার বক্তব্য অত্যন্ত বলিষ্ঠ, তথ্যপূর্ণ, যৌক্তিক ও দলিল-প্রমাণ সহকারে হয়ে থাকে। সে
সৎ কাজে আদেশ করে এবং অসৎ কাজের নিষেধ করে। সে দুনিয়ার জীবনে বেঁচে থাকে ও কাজ করে
যায়, কিন্তু তার সমস্ত ধ্যান-ধারণা, লক্ষ্য থাকে সেই জান্নাতের দিকে, যা প্রশস্ততায়
আসমান ও যমিনের মধ্যবর্তী দূরত্বের সমান এবং যা মুমিনদের জন্য তৈরী করে রাখা হয়েছে।
যারা
সত্যের পথের পথিক এবং ইসলামী খিলাফত রাষ্ট্র পূণ:প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছেন; তাদেরকে
এটি মনে করিয়ে দেওয়ার সুযোগটা আমরা হারাতে চাইনা যে তারা কোন বাস্তবতার মধ্যদিয়ে কাজ
করছেন। তাদেরকে চারপাশ থেকে ঘিরে আছে আল্লাহর শত্রু কতৃক সৃষ্ট ঝঞ্ঝা-বিক্ষুব্ধ ঢেউ।
এখন যদি তারা দিবসে এবং রজনীতে আল্লাহ অভিমুখী না হয় তবে জীবনের এই ভিন্ন পথে তারা
কিভাবে চলতে সক্ষম হবে? কিভাবে তারা তাদের কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছাবে? কিভাবে তারা উঁচু
থেকে আরো উঁচু স্তর সমূহে নিজেদের উত্তরণ ঘটাবে ? কিভাবে ? কিভাবে ?
সবশেষে
এটা বলতে হয় যে, দাওয়াকারীর দুটি হাদীস জানা থাকা জরুরী; যা তাদের লক্ষ্য অর্জনের পথকে
আলোকিত করবে এবং তাদের পথ চলাকে আরোও গতিশীল করবে।
প্রথমতঃ
“তোমাদের দ্বীনের শুরু হয়েছিলো নবুয়্যত এবং
রহমতের মাধ্যমে অতঃপর খিলাফত প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো নবুয়্যতের আদলেই..... এরপর খিলাফত
আবারও প্রতিষ্ঠিত হবে নবুয়্যতের আদলেই।”
(মুসনাদে
আহমাদ)
আল্লাহ
প্রদত্ত ইসলামী খিলাফত ব্যবস্থা যে আবারও প্রতিষ্ঠিত হবে,এই হাদীসটি তার সুসংবাদ বহন
করে। কিন্তু এটি আবারও আসবে ঠিক সেভাবে, যেভাবে তা প্রথমবার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো সত্য
পথগামীদের দ্বারা। যারা ছিলো আল্লাহর রসূলের (সাঃ) সাহাবী। বিশ্বাসী হিসেবে যারা এই
খিলাফতের প্রত্যাবর্তন দেখতে উদগ্রীব, তারা যেন এই খিলাফত পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য সর্বাত্মক
প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখে। তারা যেন সে তীব্র প্রচেষ্ঠার মাধ্যমে আল্লাহর রসূলের (সাঃ)
সাহাবীদের মত মর্যাদাসম্পন্ন হতে পারে।
দ্বিতীয়তঃ বাস্তবিকই আল্লাহ বলেন- যে ব্যক্তি
আমার বন্ধুর (একান্ত অনুগত বান্দা) সাথে শত্রুতা পোষণ করে, সে আমার সাথেই শত্রুতা পোষণ
করল। হে আদম সন্তান! তোমার উপর আমার যে আদেশগুলো বর্তানো হয়েছিলো সেগুলো পালনের মাধ্যমে
তুমি সে পুরষ্কারগুলো পাবে না; যেগুলো আমি (তোমার জন্য) সংরক্ষণ করে রেখেছি। আমার বান্দা
আমার নৈকট্য অর্জন করতে থাকবে তার নফল কাজগুলো করার
মাধ্যমে; যতক্ষণ না আমি তাকে ভালোবাসতে শুরু করি। আমি তখন তার অন্তঃকরণ হয়ে যাব, যা দিয়ে সে চিন্তা করে। তার জিহবা হয়ে যাব, যা দিয়ে সে কথা বলে। তার চোখ
হয়ে যাব, যা দিয়ে সে দেখে। অতএব, যখন সে আমাকে ডাকে, আমি তখন তার ডাকে সাড়া দেই এবং
যখন সে আমার কাছে সাহায্য চায়, আমি তখন তাকে সাহায্য করি। আমার কাছে আমার বান্দাদের
ইবাদতগুলোর মধ্যে সর্বাধিক প্রিয় ইবাদত হল-অন্যকে সর্বোত্তম উপদেশ দান করা। (আল্ কাবীর:
তাবারানী হতে বর্ণিত)
এই
হাদীসটি আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রাপ্ত বিজয়, আল্লাহর সাহায্য, তাঁর নৈকট্য এবং তাঁর রহমতের
নিশ্চয়তা বিধান করে। তিঁনি হলেন সর্বময় কতৃত্বের অধিকারী, মহা পরাক্রমশালী। যাকে তিনি
সাহায্য করেন, তাকে কেউ অপমানিত করতে পারে না এবং তিনি যাকে অপমানিত করেন, তাকে কেউ
সাহায্য করতে পারে না। যখন বান্দা আল্লাহকে ডাকে, তখন তিনি তাঁর নিকটেই থাকেন। তিনি
তখন তার বান্দার ডাকে সাড়া দেন, যখন সে আল্লাহর অনুগত্য করে। আল্লাহ তাঁর বান্দার উপর
একক কতৃত্বশালী এবং সর্বাপেক্ষা দয়ালু, সকল কিছুই তার নিয়ন্ত্রণাধীন।
ওহ মানুষেরা
! তোমরা তীব্র গতিতে আল্লাহর রহমত, ক্ষমা, জান্নাত,বিজয় ও সফলতার দিকে ধাবিত হও।
“এবং এমন
জিনিসের জন্য যারা প্রচেষ্টা চালাতে চায়, তারা প্রচেষ্টা চালাক।” (সূরা মুতাফফিফিন:
২৬)
আলহামদুলিল্ললাহ্............
উত্তরমুছুন