সোমবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১২

টিপাই মুখ বাঁধ ও আ. লীগ-বিএনপির বিশ্বাসঘাতকতার রাজনীতি

আমার এ ঘর ভাঙ্গিয়াছে যেবা আমি বাঁধি তাঁর ঘর
আপন করিতে কাঁদিয়া বেড়াই যে মরে করেছে পর

কবির এ আদর্শ যখন একটি জাতিকে আরেকটি জাতি ধ্বংস করে দিতে চায়, তার জন্য আনুকরনীয় নয়। বর্তমান পুঁজিবাদী বাস্তববাদী (realist) বিশ্বরাজনীতিতে বিশ্বাসীদের জন্য এ আদর্শ কোনো রকমেই গ্রহণযোগ্য নয় যে নীতিতে জাতীয় স্বার্থই কূটনীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কে প্রধান উপাস্য। ভারতও এ নীতির ভিত্তিতে তাদের ব্রাক্ষ্মন্যবাদী আন্তর্জাতিক সম্পর্কের নীতি বাস্তবায়ন করে। কিন্তু স্বাধীনতা পরবর্তী আওয়ামীলীগ ও বিএনপির ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের দিকে তাকালে যে নতজানু ও জাতীয় স্বার্থকে জলাঞ্জলী দেওয়ার যে ইতিহাস ; তা বিবেককে উপহাস করে। এ যেন মুমুর্ষ পদ্মার মাইলের পর মাইল চরের বালু দেখার চেয়ে হৃদয় বিদারক ।

ভাই, আপনি কি ভাবতে পারেন -একদিন (১৯৭২) এই শাসকগোষ্ঠীই ফারাক্কা বাঁধের পক্ষে কথা বলেছিল! বলেছিল, ফারাক্কা বাঁধ হলে নাকি বাংলাদেশ উপকৃত হবে। জাতির সাথে এর চেয়ে বড় গাদ্দারি আর কি হতে পারে? প্রশ্নটা কিছু দিন আগে বালুময় পদ্মার পারের এক তরুণ (রাজশাহী) আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিল। আমি কোনো সদুত্তর দিতে পারিনি তাকে। শুধু নীরব সম্মতি জ্ঞাপন করেছি। তৎকালীন শাসকগোষ্ঠী জনগণকে খোলাসা করে বুঝতে দেয়নি সুজলা-সুফলা রাজশাহী অচিরেই হতে চলেছে বালুময় বিরান ভুমিতে। প্রমত্তা পদ্মাকে উৎসর্গ করা হয়েছিল অসুর দাদা ভাইয়াদের মনরঞ্জনে। আজ আবার সেই পুরানো বিষের বাঁশিতে বিষাক্ত সুর, তবু দালালেরা শশ ব্যস্ত সেই কালো অসুরকে তৃপ্ত করতে। ক্ষমতার পালাবদলে ক্ষমতাসীন ও বিরোধীদলের ভূমিকার মধ্যে তেমন কোনো পার্থক্য দেখা যায়নি, এখনও দেখা যাচ্ছে না। বরং তারা দাদাদেরকে খুশী রেখে যে কোনো উপায়ে ক্ষমতায় টিকে থাকা ও ক্ষমতায় যাওয়ার নীতির উপরে প্রতিষ্ঠিত ।

সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে শত্রুতা নয়-তাই বুঝি এখন আহমকী নীতি তাদের বিদেশ নীতির সাথে ম্যাচ করে; যা তাদের দাদাদেরক রক্ষা করে চলে সর্বদাই। বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশ ভারত ও তার এ দেশীয় আশীর্বাদপুষ্ট শাসকগোষ্ঠী ভাল করে জানে ফারাক্কার মতো মেঘনায় বাঁধ দেওয়ার পক্ষে এ দেশের এক ভাগ লোক নেই; প্রায় শতভাগ লোকই এ বাঁধের বিপক্ষে । তাহলে, এখন তাদের ও এ দেশের  গণতন্ত্রের মানসকন্যা মাতার গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ কি উপায়ে রক্ষা হবে ?

পদ্মার মতো মেঘনাকেও হত্যার পরিকল্পনা ভারতের আজকের নয় এ কথা বিএনপি-আ.লীগ অনেক আগে থেকেই জানে। ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশকারী বরাক নদীতে বাঁধ দেওয়ার পরিকল্পনা ভারতের চার-পাচ দশক আগের। যা আয়তনে ফারাক্কার চেয়ে প্রায় দ্বিগুন। তুইভাই এবং বরাক নদীর মোহনা হতে ৫০০ মিটার নিচে মনিপুর রাজের চুরাচাদপুর জেলার কাছে আসাম ও মিজোরাম সীমান্তের কাছাকাছি এর অবস্থান। দৈর্ঘ্য ৩৯০ মিটার প্রস্থ ১৬২.৮ মিটার এবং সমুদ্র পৃষ্ট থেকে ১৭৮ মিটার উঁচুতে। আর এ বাঁধের ক্ষয়ক্ষতি যে ফারাক্কার চেয়েও কয়েকগুণ বেশি হবে তা নিয়ে বিএনপি-আ.লীগ বা বাকী সকল পক্ষের কোনো সন্দেহ নেই। তাই, এর ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ এ লেখায় দিতে চাই না

বর্তমান মহাজোট সরকারের পানি সম্পদ মন্ত্রী রমেশ চন্দ্রসেন যখন বলেছিলেন, তিনি এ বাঁধের ব্যাপারে কিছু জানেন না তখন তার তার বক্তব্যের আড়ালে যে এক বড় ধরণের প্রতারণা রয়েছে, তা একজন রিকশাওয়ালাও বুঝে । রমেশ চন্দ্র শুধু এটুকুতেই সন্তুষ্ট না থাকতে পেরে পুরো ভারতের পক্ষাবলম্বন করে গত ১৯ মে ,০৯ এক আত্মঘাতী বক্তব্য দিয়ে বলেন,ভারত যেহেতু তাদের ভূ-খণ্ডের ২০০ কিমি. ভেতরে এই বাঁধ নির্মাণ করছে তাই এতে আমাদের কোনো ক্ষতির আশংকা নেই। একই দিনে ভারতীয় হাইকমিশনারের সাথে সাক্ষাতের পর নৌ পরিবহন মন্ত্রী আফসারুল আমিন চৌধুরী আর এক ধাপ এগিয়ে বলেন টিপাইমুখ বাঁধ হলে বাংলাদেশের সুবিধা হবে। ভাইসব, এদেরকে আপনারা কি বলবেন? দেশপ্রমিক নাকি দেশদ্রোহী, জাতীয় গাদ্দার নাকি নব্যরাজাকার-এ ভার আপনাদের উপরই ছেড়ে দিলাম গত ৩ জুন, ০৯ পিনাক বাবু কূটনীতির আন্তর্জাতিক আইন সম্পূর্ণ ভঙ্গ করে বলেন,বাংলাদেশের যেসব বিশেষজ্ঞ টিপাইমুখ বাঁধের বিরোধিতা করেছেন, তা রাজনৈ্তিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত অপপ্রচার । তাদের হাতে তেমন কোনো তথ্য নেই এবং তারা বিষয়টি বুঝতে পারছেন নাএরপর ২১ তারিখ আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রী দীপু মনিরই সামনেই পিনাক বাংলাদেশের পানি বিশেষজ্ঞদের So called water expert বলে সম্বোধন করে। মুলত এসব বক্তব্য ভারত ও ভারতের এ দেশীয় দোসর নব্য রাজাকারদের জাতির সাথে অবমাননাকর আচরণ ও রাজনৈতিক প্রতারণা। কারণ, এ বাঁধ নির্মাণের আকাংখা ভারতের বহুদিনেরজওহরলাল নেহরুর মন্ত্রীসভার সেচমন্ত্রী এলরাও এবং প্রকৌশলী দীনেশ দত্ত নদী সংযোগের জন্য সত্তরের দশকে দুটি প্রস্তাব পেশ করেছিলেন, কিন্তু আর্থিক সমস্যা আর প্রযুক্তির সীমাবদ্ধতার কারণে এত দিন আঁটকে ছিল। প্রখ্যাত পানি বিশেষজ্ঞ ডঃ আইনুন নিশাত দাবি করেন ১৯৭২ সালে আ.লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীনই এ নিয়ে দুদেশের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়।এ ক্ষেত্রে আমাদের অতীত সরকারগুলোর ব্যর্থতা সবচেয়ে বেশি। তারা সময়মতো সেসব আলোচনায় বাংলাদেশের স্বার্থ তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছে এবং পুরো বিষয়টিতে জাতিকে এক ধরণের অন্ধকারে রেখেছে। এ তথ্য থেকে ভারত ও তার এ দেশের আশীর্বাদপুষ্ট দুটি দলের জনগণের সাথে প্রতারণা ও বিশ্বাসঘাতকতার চিত্র ফুটে উঠে।বর্তমানে যে সকল বাকবিতণ্ডা চলছে বিনপি ও আ.লীগের মধ্যে তা শুধু রাজনৈতিক ফায়দা লোটার জন্য। যারা এ দু দলের চরিত্র সম্মন্ধে অবগত তারা সবাই যানে এ বাঁধ নির্মাণ বন্ধ করা এদের উদ্দেশ্য নয়। এ বাঁধ যদি বন্ধ হয় তা হয়তো এ দেশের সাধারণ মানুষ এবং ভারতের ঐ অঞ্চলের মানুষের বিরোধিতার মুখে বন্ধ হতে পারে ।

প্রধান বিরোধী দল বিনপি থেকে টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে প্রবল আপত্তি জানান হচ্ছে। বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের কাছে চিঠি দিয়ে উদ্বেগ জানানোর পাশাপাশি বাঁধ নির্মাণ বন্ধ রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।

কিন্তু, তিনি ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বিএনপির নেতৃত্বাধীন বঈনপি-জামায়াত জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন । ২০০৩ সালে ভারত সরকার টিপাইমুখ জলবিদ্যুৎ প্রকল্প অনুমোদন করে। ২০০৫ সালের নভেম্বর মাসে টিপাইমুখ বাঁধের জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হয় এবং ২০০৬ সালে ফেব্রুয়ারী মাসে প্রাকযোগ্যতা যাচাই সম্পন্ন করা হয়। অথচ ২০০৫ সালে সেপ্টেম্বরে ঢাকায়ই অনুষ্ঠিত হয় দু দেশের যৌথ নদী কমিশনের ৩৬তম বৈঠক। সে বৈঠকও বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার পক্ষ থেকে জোরালো কোনো প্রতিবাদ করা হয়নি। বরং আ.লীগের কিছু নেতা এর বিরুদ্ধে কিছু কথা বলেছিলেন। আজকের যে আ.লীগের নেতারা ভোল পালটিয়ে বলছেন, তারা টিপাইমুখ বাঁধের কথা জানেনই না বা কেউ এ বাঁধের প্রকল্প থেকে বিদ্যুৎ পেয়ে বাংলাদেশ উপকৃত হবে বলে দাবি করছে। এই আ.লীগের নেতা আবুল মাল আব্দুল মুহিত ২০০৫ সালে বলেছিলেন, মানব জাতির অভিন্ন সম্পদ যে সব প্রাকৃতিক বস্তু, সে গুলোর ওপর কোনো একটি দেশ বা সরকারের একক অধিকার থাকতে পারে না নুরুল ইসলাম নাহিদ বাঁধের কারণে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছিলেন, ভারতের উত্তর -পুর্বাঞ্চলীয় রাজ্য গুলোতে বাঁধ তৈরীর চেষ্টা বাংলাদেশের জন্য ভয়াবহ পরিণাম বয়ে আনবে। অথচ এই মাল মুহিত ও নাহিদদের চোখের সামনে ফারাক্কা বাঁধ দিয়েছিল তাদের পুরাতন বন্ধু ভারত। তখন কি তাদের বোবা জিনে ধরেছিল? যা এখন আবার তাদের আছর করেছে। নাকি দেশপ্রেম, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের ভাবনাগুলো লুকিয়ে গিয়েছিল বা গেছে -দাদাদের আনুগত্যের চাটুকারিতার গরম তৈল মর্দনে।

ভাইসব, বিশ্বাস করুন আ.লীগ-বিনপির সব বক্তব্য হল জাতির সাথে রাজনৈতিক প্রতারণা। আজকে জামায়াত -বিএনপি লংমার্চের কথা বললেও হেকমোতের উছিলায় তখন ছিল নিশ্চুপ; আড়ালে লুকিয়ে। উল্লেখ্য, টিপাইমুখ নিয়ে এ যাবৎ কালের সবচে বড় প্রতিবাদ হয় ২০০৫ সালের এক লংমার্চের মধ্য দিয়ে। ভারতীয় নদী আগ্রাসন মোকাবিলার লক্ষে মাসিক মদিনার সম্পাদক মাওলানা মুহিউদ্দিন খানকে আহ্বায়ক ও হিযবুত তাহরিরের যুগ্ম সমন্বয়কারী কাজী মোরশেদুল হককে সদস্য সচিব করে প্রায় ডজন খানেক ইসলামী দলের সমন্বয়ে ২০০৪ সালে নভেম্বরে ভারতের নদী আগ্রাসন প্রতিরোধ জাতীয় কমিটি গটিত হয়। এই কমিটির উদ্যোগে গত ০৯ ও ১০ মার্চ ২০০৫ সালে লক্ষ জনতা নিয়ে টিপাইমুখ অভিমুখে সিলেটের জকিগঞ্চে ঐতিহাসিক লংমার্চ অনুষ্ঠিত হয়। তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল বিএনপি ও জামাত তখন টিপাইমুখ বাঁধের বিরুদ্ধে কোন বক্তব্য পর্যন্ত দেয়নি। কয়েক হাজার গাড়ি বহরের সাথে দশ কিলোমিটারের অধিক দীর্ঘ ঐ লংমার্চ কাফেলা বিশ্ববাসীর নজর কারতে সক্ষম হয়। গৌরবের সঙ্গে স্মরণ করতে ইচ্ছে হচ্ছে তখন অনেক ছাত্রের দলে আমিও একজন ছিলাম সে লংমার্চে হাজার হাজার জনতার দলে। সত্যি বলতে কি অত বড় স্বতঃস্ফূর্ত জনসমাবেশ আমি আর দেখিনি। লক্ষ বজ্র কণ্ঠে একই স্লোগান

ভারতের কালো হাত ভেঙ্গে দাও,গুড়িয়ে দাও

যেন আকাশ ফেটে পড়ছিল নিনাদে। কিন্তু বিনপি-জামায়াত জোট সরকার এ জনতার কণ্ঠস্বরের সঙ্গে একটু একাত্মতা প্রকাশ করতেও সে দিন আসেনি। আর অন্য দিকে আওয়ামী সরকারের বর্তমান মেকিমার্কা প্রতিবাদের পিছে যে জনগণের সাথে করে আসা ৩৯ বছরের প্রতারণার ইতিহাস লুকিয়া আছে-ভাইসব, এ সত্যেকে আপনাদের বুঝতে হবে আজ বলে রাখছি একটি কথা-জেনে রাখুন আ.লীগ সরকার চারদলীয় জোট সরকারের মতোই জাতির সাথে জেনে বুঝে খুব ঠাণ্ডা মাথায়ই গাদ্দারি করেছে, করছে এবং করবে। তারা ফারাক্কার মতো টিপাইমুখ বাঁধ নিয়েও কথার কাদা ছোড়াছুড়ি করে জনগণকে অন্ধকারে রাখবে। ভারতের শত্রুতার মুখোশ উন্মোচন তারা কোনো দিনই করবে না। তারা এ বাঁধ বন্ধের কার্যকর পদক্ষেপ কোনো মতেই গ্রহণ করবে না। ইতিহাস তাই বলে। যা করার ভাই আমাদের করতে হবে।

ভাইসব, বিশ্বাস করুন আর না করুন সাম্রাজ্যবাদী আর্শীবাদপুষ্ট এ দালাল শাসকগোষ্ঠি ক্ষমতায় যাওয়ার আগেই স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব -জনগণের স্বার্থের সাথে গাদ্দারি করবে এমন মুচলেকা দিয়েই ওয়াশিংটন, সৌদিআরব, দিল্লি হয়ে ঢাকার প্লেন উঠে। কিন্তু, আমি, আপনি এ মাটির নদী আমাদের মায়ের মতোই স্নেহে রেখেছে। শত পিপাসার জলের জন্য আমরা এখনো মেঘনা-পদ্মার কাছে ছুটে আসি। এ মাটির জলেই অজু করে কৃতজ্ঞতার সিজদায় লুটিয়ে পড়ি এর সৃষ্টিকর্তার সামনে। নদী বিধৌত এ মাটির সাথে আমাদের অস্তিত্ব জড়িয়ে আছে। তাই এ মাটিকে মরুভূমি বানানোর চক্রান্ত কোনো মতেই মেনে নেওয়া যায় না কিছু খোয়া গেলে আমাদের গেছে,আমাদের যাবে। কোনো মতেই নব্য রাজাকারদের দেশপ্রেমের মেকি কান্নায় ভুলবেন না। আসুন আমরা বজ্র্য কণ্ঠে আবারও আওয়াজ তুলি,

সাম্রাজ্যবাদের দালালেরা হুঁশিয়ার সাবধান।
গাদ্দারদের আস্তানা,এই জমিনে রাখব না
মুক্তির এক পথ খিলাফত, খিলাফত ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন