মঙ্গলবার, ৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১২

অনৈসলামিক ব্যবস্থায় নিজেদের অধিকারের দাবী করা কি বৈধ?

প্রশ্নঃ অনৈসলামিক ব্যবস্থায় নিজেদের অধিকারের দাবী করা কি বৈধ? উদাহারনস্বরূপ, বর্তমান কুফর ব্যবস্থায় আমরা কি কোর্টে বিচারের জন্য যেতে পারি ? যদি যাওয়া যায় তবে তার জন্য কোন শর্ত আছে কি?

উত্তর:

১। কোন ব্যক্তি তার অধিকার আদায়ের জন্য, তা দাবী করতে পারে। যদি তার উপর কোন জুলুম হয়, তবে তা থেকে নিজেকে রক্ষা করা ও নিজেকে সঠিক বলে প্রমাণ করার অধিকার তার আছে।পাশাপাশি এই অধিকারগুলোর দাবী সে নিজে করতে পারে অথবা তার পক্ষ হতে কোন উকিল নিয়োগ করতে পারে।

২। তবে যে অধিকারগুলো সে দাবী করবে তা অবশ্যই শারীয়া কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে। এক্ষেত্রে কোনটি জুলুম আর কোনটি অধিকার তা বর্তমান মানবরচিত ব্যবস্থার মাধ্যমে নির্ধারণ করা যাবে না।

যেমন ধরুন একজন লোক মদ বিক্রি করলো কিন্তু ক্রেতা তাকে দাম দিলো না সেক্ষেত্রে বর্তমান ব্যবস্থা অনুসারে মদ বিক্রেতার অধিকার আছে মদের দাম পাবার কিন্তু শরীয়া অনুসারে মদ বিক্রি করাই যেখানে হারাম সেখানে দাম পাওয়ার অধিকার কেউ রাখে না।

অনুরূপভাবে বলা যায়, কোন একটি ব্যাংক তার মক্কেলকে সুদ পরিশোধ করল না সেক্ষেত্রে সেই মক্কেল তার উপর জুলুম করা হয়েছে এ কথা বলে সুদ পাওয়া তার অধিকার এমনটা দাবী করতে পারবে না কারন সুদ বিষয়টি হারাম।সুতরাং, কোনটি জুলুম বা কোনটি অধিকার তা নির্ধারণ করবে শারীয়া।

৩। শারীয়া কর্তৃক অনুমোদিত অধিকারগুলো দাবী করতে গিয়ে কোন মুসলিম বা তার উকিল বর্তামান বিচার ব্যবস্থার প্রশংসা করতে পারবে না এবং এরূপ করা সম্পূর্ণ হারাম। সে শুধুমাত্র তার অধিকারের পক্ষে ও জুলুমের বিরুদ্ধে প্রমান ও দলীল উপস্থাপন করতে পারবে।

৪। দারূল ইসলাম ও দারূল কুফর নির্বিশেষে প্রত্যেক মুসলিম তার অধিকার আদায় ও জুলুম অপসারণের দাবী করতে পারে। নিম্নে তার দলীলগুলো উপস্থাপন করা হল:

ক। অধিকার বিষয়ক আয়াতগুলো কোন নির্দিষ্ট বাস্তবতার সাথে সম্পর্কিত নয় বরং দারুল ইসলাম ও দারুল কুফর উভয়ের জন্য প্রযোজ্য।

খ। কিছু মুসলিম যখন আবিসিনিয়ায় হিজরত করেন তখন কুরাইশরা নাজ্জাশীকে বলেন তিনি যেন মুসলিমদের কুরাইশদের নিকট হস্তান্তর করে। সে সময় মুসলিমরা নাজ্জাশীকে বলেন কিভাবে কুরাইশরা তাদের উপর জুলুম করেছে এবং কুরাইশদের সকল সকল মিথ্যা দাবীর বিরুদ্ধে প্রমান উপস্থাপন করেন। অর্থাৎ, তারা তাদের অধিকারের দাবী করেন ।

গ। মক্কা বিজয়ের পূর্বে কিছু মুসলিমকে রাসূল (সা) মক্কায় থাকার অনুমতি দিয়েছেলেন যদিও তখন মদিনায় ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হয়েছে এবং অন্যান্য মুসলিমরা সেখানে হিজরত করেছে। যেকোনো সমাজে জীবন যাপনের সাথে অধিকার আদায় ও জুলুমকে অপসারনের বিষয়টি আবশ্যিকভাবে জড়িত। এক্ষেত্রে দারুল ইসলামের অস্তিত্ব থাকা সত্ত্বেও দারুল কুফরে অবস্থানের অনুমতি দেওয়ার মধ্য দিয়ে দারুল কুফরে অধিকার ও জুলুম অপসারনের দাবী করা অনুমোদিত এই বিষয়টি নির্দেশিত হয়।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন