বুধবার, ৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১২

হাজ্জ এর শিক্ষা

হাজ্জ ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ রুকন। যখন কোন মুসলিমের হাজ্জ এ যাওয়ার মত আর্থিক এবং শারীরিক শক্তি সামর্থ্য হয় তখন তার জন্য হাজ্জ এ যাওয়া ফারদ হয়।

কিন্তু এখন হাজ্জ এ যাওয়া প্যাকেজ প্রোগ্রামের মত হয়ে দাঁড়িয়েছে। হালাল-হারাম বাচবিছার না করে সারা জীবন কোনমতে চালিয়ে দিয়ে শেষ বয়সে হাজ্জ করলাম, মায়ের পেট থেকে ভূমিষ্ঠ নবজাতক শিশুর মত নিষ্পাপ হয়ে গেলাম, নামের আগে “আলহাজ্জ” লাগিয়ে দিলাম, দাড়ি রেখে দিলাম, সবাইকেই জানানো হল হাজ্জ করেছি। কি মজা। ইসলাম কত সহজ!!

অথচ হাজ্জ এর মহত্ব যে কত বিশাল, তা তো আমরা বুঝিই না বরং এটাকে একটা স্রেফ ধর্মীও আচার বলে চালিয়ে দেই। “সারা বিশ্বের লাখো মুসল্লি পবিত্র মক্কাতে হাজ্জ গুরুগাম্ভীর্যের সাথে পালন করছে” এই টাইপের হেডলাইন পাওয়া যায় পত্রিকাগুলোতে। কেউ কেউ “কুরবানি থেকে ত্যাগের শিক্ষা” নিতে এসএমএস বা ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েই শেষ।

দুল-হিজ্জা (বা বাংলায় প্রচলিত জিলহাজ্জ) মাসের পুরোটাই তাৎপর্যপূর্ণ এবং প্রথম দশ দিন এর গুরুত্ব, হাজ্জ কে কেন্দ্র করে মুসলিমদের ঐক্য, বিদায় হাজ্জ এর ভাষণ, কুরবানি থেকে শিক্ষা, বা ইব্রাহিম (আলাইহিস সালাম) এবং তার পরিবারের শারীয়াহ এর প্রতি আনুগত্য ইত্যাদি অনেক কিছুই আছে যা আমাদের অজানা এবং এসব নিয়ে আলচনাও হয় না। তার মধ্য থেকে কিছু দিক সংক্ষেপে আলোচনা করা যাকঃ

১) একমাত্র আল্লাহের ইবাদাহ করা এবং শরীক না করাঃ

হাজ্জ এর সময় সারা বিশ্বের মুসলিমরা তাল্বিয়া (তাকবিরে তাহ্রিমা) দিতে দিতে একত্রিত হয় আল্লাহের ঈবাদাতের জন্য। আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাঃ) বলেন, আল্লাহের রাসুল (সাঃ) এর তাল্বিয়া ছিলঃ “লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইক লা শারিকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়ালমুক, লা শারিকা লাকা”। [বুখারি, ২য়া খন্ড, অধ্যায় ২৬, হাদিত ৬২১]।

অর্থাৎ, “আমি আপনার ডাকে সাড়া দিয়েছি ও আল্লাহ্‌ আমি আপনার ডাকে সাড়া দিয়েছি, আমি আপনার আদেশের বাধ্য, আপনার কোন শরীক নেই, আমি আপনার ডাকে সাড়া দিয়েছি, সকল প্রশংসা এবং অনুগ্রহ আপনার, সার্বভৌমত্ব আপনার, আপনার সাথে কোন শারিক নেই”।

এই তাকবিরে তাহরিমার মাধ্যমেই মুসলিমরা ঘোষণা দেয় যে তারা একমাত্র আল্লাহের ইবাদাহ করবে, অন্য কারোর (কোন ব্যাক্তি বা ফেরশ্তা বা নবী বা শয়তান, কোন আদর্শ, কোন প্রাকৃতিক বা ক্রিত্তিম বস্তু ইত্যাদি) ইবাদাহ করবে না। মুসলিমরা ঘোষণা দেয় যে তারা আল্লাহের সাথে কাওকে শরীক করবে না (আল্লাহের সাথে কোন ব্যাক্তির বা বস্তুর, আল্লাহের আইন বাদ দিয়ে মানুষের তৈরি আইন ইত্যাদি) সার্বভৌমত্ব একমাত্র আল্লাহের (মানুষের নয়)।


অথচ আজ আমরা আল্লাহ ছাড়াও হাজারটা ইলাহ (আব্রাহাম লিঙ্কন, এডাম স্মিথ, কার্ল মারক্স, মুজিব, জিয়া, পীর, শাহরুখ, অইশ্যারিয়া, শচিন তেন্ডুল্কার, মেসি ইত্যাদি) বানিয়ে রেখেছি, যাদের ইবাদাহ (উপাসনা) আমরা করছি। একি রকম, হাজ্জ শেষ করে দেশে এসে আবার ঠিকই আমরা আল্লাহের দেয়া বিধান (শারীয়াহ) কে বাদ দিয়ে মানব রচিত সংবিধান দ্বারা জীবণ যাপন করছি, যা সরাসরি আল্লাহের সাথে শীরক করার সামিল।

আমাদের উপর ফারদ দায়িত্ব হল এসব মানব-রচিত ভুলত্রুটিপূর্ণ সংবিধান আস্তাকুড়ে ফেলে দিয়ে খিলাফাহ ব্যাবস্থা প্রতিষ্ঠা করে শারীয়াহ বাস্তবায়ন করা।

২) মুসলিম উম্মাহের একতাঃ

হজ্জ এর সময় সবচেয়ে আশ্চর্যজনক ব্যাপার হল সমগ্র বিশ্বের মুসলিমরা, বিভিন্ন অঞ্চল থেকে, সাদা-কালো, আরব-অনারব, বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে একই সময় এক জায়গাতে মিলিত হয়। মরক্কো থেকে মালায়শিয়া, আমেরিকা থেকে আস্ট্রেলিয়া, আফ্রিকার জঙ্গল, স্কেন্ডেনেভিয়ার বরফাচ্ছন্ন অঞ্চল, মধ্য এশিয়া সব জায়গা থেকে মুসলিমরা একত্রিত হয় একমাত্র আল্লাহের ইবাদাহের জন্য। সবাই আল্লাহের চোখে সমান। জওান-বৃদ্ধ, নারি-পুরুষ সবাই একসাথে সালাহ আদায় করছে, সাফা-মারওয়া তে দউড়াচ্ছে, শয়তান কে পাথর ছুড়ছে। অথচ মুসলিমদের ভুখন্ডকে কে কাফেরদের বা তাদের দালালদের দ্বারা তৈরি সীমানা দিয়ে মিথ্যাভাবে আলাদা করে রাখা হয়েছে। এটা পরিষ্কার ভাবে বুঝা যায়, এটা বঝার জন্য আলেম হওয়া বা বিশ্ববিদ্যালায় এ যাওয়ার দরকার নাই।

পবিত্র কোরআন মাজিদে আল্লাহ (সুবহানাহু ওয়া তা’লা) বলেন – “তোমরা সকলে একত্রে আল্লাহের রজ্জু (রশি) কে শক্ত করে আঁকড়ে ধর, এবং তোমরা বিভক্ত হয়ও না”। (সুরাহ ইমরানঃ ১০৩)

আবু মুসা হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সাল্লাম) বলেছেন – “একজন মুমিন অন্য মুমিনের কাছে দেয়ালের মত, যার বিভিন্ন অংশ পরস্পরকে শক্তিশালি করে”। (বুখারী)

আত-তাবারানি এবং আল-হাকিম থেকে বর্ণিত, কোন এক ঘটনার প্রেক্ষিতে কিছু লোক সালমান আল-ফারসি (রাদিয়াল্লাহু আনহু) কে “পারসি” বলে অপমানিত করার চেষ্টা করে এবং আরব থেকে নিচু শ্রেণী হিসেবে সম্বোধন করে। রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সাল্লাম)যখন এটা শুনেন, তখন তিনি বলেন, “সালমান আহলাল বাইতের (নবীর পরিবারের) অন্তর্গত”। এ দ্বারা রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সাল্লাম) আরব-অনারব বা জাতিগত বিভেদ মুসলিমদের জন্য হারাম করে দেয়।

ইবন আল মুবারাক তার গ্রন্থ “আল বির ওয়া আল-সালাহ” তে বর্ণনা করেন, একবার আবূ ধার গিফারি এবং বিলাল (রাদিয়াল্লাহু আনহু) এর মধ্যে কথা কাটাকাটির সময় আবূ ধার গিফারি (রাদিয়াল্লাহু আনহু), বিলাল (রাদিয়াল্লাহু আনহু) কে বলেন, “তুমি কালো মহিলার সন্তান”। এটা শুনে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সাল্লাম) খুবই আহত হন এবং আবু ধার কে বকা দেন, “সাদা চামড়ার মহিলার সন্তান, কালো চামড়ার মহিলার সন্তান থেকে কোন কারনেই উত্তম নয়”। এটা শুনে আবু ধার  (রাদিয়াল্লাহু আনহু) মাটিতে মাথা পেতে দেয় এবং বলে, “বিলাল, যতক্ষণ না তুমি আমার মাথার উপর তোমার পা রাখছো আমি মাথা মাটি থেকে উঠাবো না”। রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সাল্লাম) এর ধমক দ্বারা বুঝা যায়, ইসলামে বর্ণবাদ ও হারাম। সকল মুসলিম সমান, এবং আমাদের মধ্যে কোন বেদাভেদ নেই।

কোরআন – হাদীত দ্বারা প্রমাণিত সত্য – মুসলিমদের ঐক্য আজ কোথায়? হাজ্জে ফিলিস্তিনী ভাইয়ের সাথে মক্কা তওয়াফ করে দেশে এসে ফিলিস্তিনীদের জন্য কিছু করা ত দূরে থাক, তাদের কথাই মনে হয় না। ইরাকি ভাইদের পাশেই দাড়িয়ে একসাথে রুকু-সিজদা করে এখন তাদের অবস্থা টেলিভিশন এ দেখে মাঝে মধ্যে উফ-আহ করি। এটাই কি হাজ্জ আমাদের কে শিক্ষা দেয়? মুসলিমদের জাতীয়তাবাদ, বর্ণবাদ ইত্যাদি হারাম। সকল মুসলিম এক উম্মাহ। আমাদের মধ্যে ভাষা, চেহারা, খাদ্য বা পোশাকে ব্যাতিক্রম থাকলেও আমাদের জাতীয়তা একটাই – “মুসলিম”। আফঘানিস্তানে কোন বোন অপমানিত হলে সেটা আমারই বোন অপমানিত হল। সোমালিয়ার শিশু না খেয়ে মারা গেলে আমার শিশুই যেন মারা গেল।

আজ আমাদের কে ব্রিটিশ-আমেরিকানরা ৫০টার বেশি দেশ এ বিভক্ত করে রেখেছে। মুসলিমদের শাসকগন পুঁজিবাদীদের দালালি করতে করতে শেষ পর্যন্ত আস্তাকুড়েই নিক্ষিপ্ত হচ্ছে। আমাদের ৫০টার বেশি সেনাবাহিনী অলস বসে আছে অথচ জিহাদের ডাক দেওয়ার মত কেউ নাই। আজ যদি খিলাফাহ (ইসলামি ব্যাবস্থা) থাকতো তাহলে মুসলিম সেনাবাহিনীর “আল্লাহু আকবর” ধনীই যথেষ্ট ছিল, ইসরাইল বা আমেরিকা মুসলিম ভূখণ্ড দখল করার আগে একশবার অংক কষত। আজ যদি খিলাফাহ থাকতো তাহলে মুসলিমদের প্রাকৃতিক সম্পদের সুষ্ট ব্যাবহার করে মুসলিম উম্মাহকে আজ বিশ্বব্যাংক এর কাছে হাত পাততে হত না (যদিও বিশ্বব্যাংক কোন সাহায্য করছে না বরং ঋণের বেড়াজালে বেঁধে দিচ্ছে)।

৩) ইব্রাহিম (আলাইহিস সালাম) এর শারীয়াহ এর প্রতি আনুগত্যঃ

হাজ্জ মুলত ইব্রাহিম (আলাইহিস সালাম) এর ঘটনাকেই মনে করে দেয়। আল্লাহ দ্বারা ইব্রাহিম (আলাইহিস সালাম) আদিষ্ট হন যে তাকে তার সবচেয়ে প্রিয় জিনিসকে আল্লাহের রাস্তায় কোরবানি করতে হবে। তিনি তার সন্তান ইসমাইল(আলাইহিস সালাম) কে কোরবানি করতে মনস্থির করেন এবং ইসমাইল (আলাইহিস সালাম) কে ব্যাপারটা জানান। অথচ ইব্রাহিম (আলাইহিস সালাম) আল্লাহের আদেশের প্রতি বিন্দু মাত্র দ্বিধা করেন নাই, বরং তিনি তা শীঘ্রই পালন করার প্রস্তুতি নেন। আল্লাহ যা আদেশ করেছেন, ইব্রাহিম (আলাইহিস সালাম) এর জন্য তা-ই শারীয়াহ ছিল, এবং তিনি শারিয়াহের প্রতি অটুট ছিলেন। তিনি এক্ষেত্রে কোন নিজের মতামত পোষণ করেননি।

একি ভাবে ইসমাইল (আলাইহিস সালাম) কে যখন বলা হল তাকে কোরবানি দেয়া হবে, তিনিও বিচলিত হন নি। কারণ তিনিও বুঝেছেন এটা আল্লাহের আদেশ এবং এখানে কোন দ্বিমত পোষণ এর কোন অবকাশ নাই।

ইব্রাহিম (আলাইহিস সালাম) যখন তার পরিবার কে সাফা-মারওয়া পর্বতদ্বয় এর মাঝখানে রেখে যায়, বিবি হাজিরাও বিচলিত হন নি। কারণ তিনিও বুঝতে পারেন যে এটা আল্লাহের আদেশ, এই জনমানবহীন এলাকাতে তাদের আল্লাহ (সুবহানাহু ওয়া তা’লা) বিপদে ফেলবেন না। বিবি হাজিরা ইব্রাহিম (আলাইহিস সালাম) কে নিশ্চিন্ত থাকতে বলেন।


ইব্রাহিম (আলাইহিস সালাম) এবং তার পরিবারের আল্লাহের শারিয়াহের প্রতি অটুট থাকা - আমাদের জন্য বিশাল শিক্ষা। আল্লাহের প্রতিটা পরীক্ষায় তারা উত্তীর্ণ হন, সুবহানাল্লাহ।

অথচ আমাদের সামনে কোন হাল্কা পরিক্ষা আসলেই আমরা শারিয়াহ থেকে সরে যাই, এবং হাজারটা কারণ দেখিয়ে টাল-বাহানা করতে থাকি। শারিয়াহ কে কঠিন / বর্বর সাব্যস্ত করে আমরা পালনও করি না এবং বাস্তবায়নও করি না।

৪) আল্লাহের রাস্তায় ত্যাগঃ

ইব্রাহিম (আলাইহিস সালাম) তার প্রাণপ্রিয় পুত্র কে কোরবানি করে আল্লাহের রাস্তায় কিভাবে সবচেয়ে প্রিয় জিনিসকে ত্যাগ করতে হয় তা দেখিয়ে দিয়েছেন। আল্লাহের জন্য নিজের পুত্র কে কোরবানি করতে তার বাঁধা আসেনি। কিন্তু আমরা সাদাগা (দান) ত দূরে থাক, যাকাত ও ঠিক মত দেই না। আবার অর্থ-কড়ি দান করলেও আল্লাহের রাস্তায় একটু সময় ব্যয় করতে ইচ্ছা করে না। অথচ ইসলাম আমাদেরকে জান-মাল দিয়ে আল্লাহের পথে দাওয়া করতে বলে। আল্লাহের জন্য ত্যাগ করতে প্রতিযোগিতা করতে বলা হয়েছে। আবু-বকর আর উসমানের এর মধ্যে দান করা নিয়ে প্রতিজগিতার ঘটনা আমরা সবাই জানি। আর খালিদ বিন ওয়ালিদ (রাদিয়াল্লাহু আনহু), হামজা বিন আব্দুল মুত্তালিব (রাদিয়াল্লাহু আনহু), আবু উবাইদাহ ইবন আল-জাররাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু), সা’দ ইবন আবি আক্কাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু), আব্দুর রাহমান বিন আউফ (রাদিয়াল্লাহু আনহু), আমর বিন আল আ’স (রাদিয়াল্লাহু আনহু) এর জিহাদের ময়দানে ত্যাগের কথা বললে ত্ শেষ করা যাবে না!!

৫) জামজাম এর পানি এবং শাইতান কে পাথর নিক্ষেপঃ

জামজাম এর কূপ একটি আল্লাহের কারামাহ। ইব্রাহিম (আলাইহিস সালাম) এর সময় থেকে এখন পর্যন্ত জামজাম এর কূপ থেকে পানি অবিরত উতসরিত হচ্ছে, সুবহানাল্লাহ ওয়া বিহামদিহি, আল্লাহু আকবর। সকল প্রশংসা আল্লাহ তা’লার, আল্লাহ কত মহান। জামজাম এর পানি একটি প্রত্যক্ষ প্রমাণ যে আল্লাহ তা’লা যা ইচ্ছা করেন তাই হয়।

হাজ্জ এর সময় মুসলিমরা শাইতান কে পাথর নিক্ষেপ করে। এ থেকে মুসলিমরা শাইতান এর ওয়াসওয়াসা (কূপ্রোরচনা) থেকে বেঁচে থাকার এবং হারাম কাজ থেকে নিজেকে বাঁচানোর প্রশিক্ষণ নিয়ে আসে। কিন্তু বাস্তব জীবনে এসে কতটুকু প্রতিফলিত হয় তা দেখার বিষয়।

৬) রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সাল্লাম)এর বিদায় হাজ্জ এর ভাষণঃ

বিদায় হাজ্জ এর ভাষণ বা “খুতবাতুল ওয়িদা” খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। এই খুতবাতে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সাল্লাম)বিশেষ কিছু বিষয়ের প্রতি গুরুত্ব দিয়েছেন। সংক্ষেপে তা নিচে দেয়া হলঃ

ü  ইসলাম একটি পূর্ণাংগ জীবনব্যাবস্থা। আল্লাহ তা’লা মানুষদের জন্য ইসলামকে একমাত্র সঠিক জীবনব্যাবস্থা হিসেবে মনোনীত করেছেন।
ü  রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সাল্লাম) এর যে দায়িত্ব (ইসলামকে অন্য সকল জীবনব্যাবস্থার উপর প্রতিষ্ঠিত করা) ছিল, তা তিনি পূর্ণ করেছেন।
ü  রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সাল্লাম) এর পর কোন নবী আসবেন না, তবে আমাদের কে কোরআন এবং সুন্নাহ কে শক্ত করে আঁকড়ে ধরতে হবে।
ü  মুসলিমদের জান-মাল পৃথিবীর সবকিছু থেকে উত্তম।
ü  কাফিররা অনবরত মুসলিমদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে থাকবে।
ü  সালাহ (নামাজ), সিয়াম (রোজা), যাকাহ (যাকাত), হাজ্জ (যদি সামর্থ্য থাকে) আদায় করতে বলা হয়েছে।
ü  শাইতান থেকে সাবধান। ছোট গুনাহ থেকেও সাবধান।
ü  আল্লাহ এর কাছে আমাদের জবাবদিহিতা করতে হবে।
ü  মুসলিম উম্মাহ এক (উম্মাতুল ওয়াহিদা) এবং  মুসলিমদের মধ্যে কোন জাতিগত বা বর্ণগত বৈষম্য নেই।
ü  নারীদের হক সম্পূর্ণ রুপে আদায় করতে হবে।
ü  সুদ যে হারাম, তা বারবার সাবধান করে দিয়েছেন।
ü  আল্লাহের রাস্তায় দাওয়া করতে হবে উত্তম ভাবে।

আল্লাহ সুবহানাহু তা’লা আমাদের কে হাজ্জ এর গুরুত্ব বোঝার এবং এর থেকে শিক্ষা নেওয়ার তৌফিক দিন, আমিন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন