নিম্নোক্ত
প্রবন্ধটি প্রখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ ও গবেষক শাইখ তাকী উদ্দীন আন-নাবহানি
(রাহিমাহুল্লাহ) কর্তৃক লিখিত ‘নিযামুল ইসলাম’ বইটির খসড়া অনুবাদ-এর একাংশ হতে
গৃহীত
রাসূলুল্লাহ (সা) সম্পাদিত
কাজগুলো দুই প্রকার; যথা: যে সকল কাজ তার
মানবীয় প্রকৃতির অংশ এবং অন্যান্য কাজ। তার মানবীয় প্রকৃতির সাথে সম্পর্কিত সকল
কাজ যেমন তার দাড়ানো, বসা, পানকরা, খাওয়া ইত্যাদি
তর্কাতীতভাবে তার জন্য ও গোটা উম্মাহ'র জন্য অনুমোদিত
(মুবাহ)। ফলত; তার এসকল কাজগুলো মানদুব
শ্রেনীর অন্তর্ভূক্ত নয়।
যে সকল কাজ তার মানবীয়
প্রকৃতির অংশ নয়, সে সমস্ত কাজগুলো হয়
সুনির্দিষ্ট ভাবে তার ব্যক্তিগত অর্থাৎ তিনি ব্যতীত অন্য কারো দ্বারা সম্পাদন
নিষিদ্ধ অথবা অন্যান্য কাজগুলো যা তার ব্যক্তিগত কাজ নয়। যে সমস্ত কাজ
সম্পূর্ণভাবে তার ব্যক্তিগত হিসাবে প্রমাণিত যেমন, দিন রাত্রে ক্রমাগত রোজা রাখা এবং চারের বেশী স্ত্রী বিয়ে করা ইত্যাদি
শুধুমাত্র তার জন্যই নির্দিষ্ট এবং আমাদের কারো জন্য তা অনুকরণের চেষ্টা করা
হারাম। এটি ইজমা দ্বারা প্রমানিত এবং আমাদের এ কাজগুলো অনুকরণ করা নিষিদ্ধ।
রাসূলুল্লাহ (সা) এর অন্যান্য
কাজ যা আমাদের শিক্ষা ও অনুসরণের জন্য করেছেন এবং তা তর্কাতীত ভাবে সুস্পষ্ট দলীল।
এগুলো কোন স্পষ্ট বাক্য দ্বারা প্রমাণিত হতে পারে; যেমন,
صَلُّوا كَمَا رَأَيْتُمُونِى أُصَلِّى
"তোমরাও অনুরূপ ভাবে
সালাত আদায় কর যেমনটি আমাকে দেখেছ।" এবং
خذوا عني مناسككم
"সকল ঈবাদতের কাজে আমাকে
গ্রহণ কর।"
ফলে এ বাক্য থেকে স্পষ্ট
প্রতীয়মান হয় যে, তিনি একাজগুলো করেছেন
যেন আমরা তাকে অনুসরন করতে পারি। অথবা এগুলো কোন অবস্থাগত (circumstantial) তথ্যপ্রমাণ অর্থাৎ তার (সা)
এর কাজের বর্ণনা থেকেও জানা যায়, যেমন চুরির শাস্তির
স্বরূপ বোঝাতে চোরের কব্জি থেকে হাত ছিন্ন করার বিষয়টি রাসূলুল্লাহ (সা) আল্লাহ
সুবহানাহু ওয়া তা'লার নিম্নোক্ত বাণীর
ব্যখ্যা হিসাবে প্রদান করেছেন,
فَاقْطَعُوا أَيْدِيَهُمَا
"তাদের উভয়ের হস্তদ্বয়
কর্তন কর।" (সুরা আল মায়িদা: আয়াত ৩৮)
রাসুলুল্লাহ (সা) এর কোন
বক্তব্য বা তার (সা) কাজের বর্ণনা যে মূল হুকুমের ব্যখ্যা প্রদান করে, তার (সা) ব্যখ্যার ক্ষেত্রেও একই হুকম প্রযোজ্য। অর্থাৎ
তিনি (সা) যদি কোন ফরজ বা ওয়াজিবের ব্যখ্যা দেন তবে তার (সা) সেই ব্যখ্যা অনুসরণ
করাও হবে ফরজ/ওয়াজিব। ঠিক অনুরূপ হবে মানদুব বা মুবাহ হুকুম গুলোর ক্ষেত্রেও।
রাসূলুল্লাহ (সা) এর যে সকল
কাজ তার (সা) অসম্মতি বা সম্মতি'র সাথে সম্পর্কিত নয়, সেগুলোর উদ্দেশ্য হয় কুরবাহ (আল্লাহ'র নৈকট্য) অর্জন কিংবা তা নয়। যদি এর উদ্দেশ্য হয় কুরবাহ
তবে তা মানদুব হিসাবে পরিগণিত হয়, যা পালন করলে
পুরুষ্কার রয়েছে কিন্তু তা হতে বিরত থাকলে শাস্তি পেতে হবেনা। এধরণের একটি সুন্নাহ'র উদাহরণ হচ্ছে দুহা (সকাল/পূর্বাহ্ন) এর সুন্নাহ। অবশ্য
যদি এ ধরণের কাজের পিছনে আল্লাহ'র কুরবাহ স্পষ্ট না
হয়, তবে তা অনুমোদিত কাজ (মুবাহ)
হিসাবে পরিগণিত হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন