শুক্রবার, ২ মার্চ, ২০১২

খিলাফত রাষ্ট্রে মৌলিক নাগরিক অধিকার ও সামাজিক নিরাপত্তার বিধান

মানুষ সমাজবদ্ধ জীবন যাপন করে এবং রাষ্ট্র হচ্ছে সমাজ পরিচালনার সাংগঠনিক কাঠামো। রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থার অন্যতম মূল কাজ হচ্ছে তার নাগরিকদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা। একথা সবাই নির্দ্বিধায় স্বীকার করবে যে বর্তমান শাসনব্যবস্থা মানুষের মৌলিক অধিকার খাদ্যবস্ত্রবাসস্থানচিকিৎসাশিক্ষা ইত্যাদি প্রদান করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। বাংলাদেশের সরলপ্রাণ কঠোর পরিশ্রমী জনসাধারণ দারিদ্র বিমোচনের নামে অনেক প্রতিজ্ঞা আর প্রকল্পের ছড়াছড়ি দেখেছে। দুর্নীতিবাজ শাসকগোষ্ঠীর পেট আর পকেট ফুলে ফেঁপে উঠেছে। অথচ জনসাধারণের ভাগ্যের অবনতি ছাড়া ন্যূনতম কোন পরিবর্তন সাধিত হয়নি। শুধু তাই নয়মানুষের জীবনসম্পদ ও সম্মানের নিরাপত্তা দিতেও বর্তমান শাসনব্যবস্থা চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ইসলামের বাস্তবায়নের মাধ্যমেই কেবলমাত্র নাগরিকদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব। এই ক্ষেত্রে খিলাফত সরকার কোন বিষয়গুলো অগ্রাধিকার দিবে আর কোন বিষয়গুলো ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করবে সে সম্পর্কে ইসলাম সুনির্দিষ্ট দিক নির্দেশনা প্রদান করেছে।

মৌলিক চাহিদা পূরণে খলীফার বাধ্যবাধকতা
ইসলাম মানুষের চাহিদাগুলোকে সামষ্টিকভাবে না দেখে প্রত্যেক ব্যক্তির চাহিদাগুলোকে স্বতন্ত্রভাবে বিচার করে। স্বতন্ত্রভাবে প্রত্যেক ব্যক্তির মৌলিক চাহিদা পূরণ না করে সামগ্রিকভাবে পুরো সমাজের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি করা ইসলামিক রাষ্ট্রের উদ্দেশ্য নয়। ইসলাম প্রত্যেক ব্যক্তির মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত না করে সবাইকে সমাজ থেকে যেনতেনভাবে তা অর্জন করার জন্য বিচ্ছিন্নবভাবে ছেড়ে দেয় না। আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তাআলা খিলাফত রাষ্ট্রের উপর জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ব্যক্তিগতভাবে প্রত্যেকটি নাগরিকের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা এইসব মৌলিক চাহিদা পূরণকে ফরয বা বাধ্যতামূলক করে দিয়েছেন। সুতরাং খিলাফত রাষ্ট্র সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে জনগণের এসব মৌলিক চাহিদা পূরণ নিশ্চিত করবে। অতঃপর তার সামর্থ্যের মধ্যে জীবনযাত্রার মান বাড়িয়ে স্বাচ্ছন্দ্য অর্জনের জন্য পরিবেশ তৈরী করবে। রাসূল (সাঃ) বলেন,

বাস করার জন্য একটি গৃহ, আব্ররক্ষার জন্য এক টুকরা কাপড়, আর খাওয়ার জন্য এক টুকরা রুটি ও একটু পানি এসবের চেয়ে অধিকতর জরুরী কোন অধিকার আদম সন্তানের থাকতে পারে না।” (তিরমিযী)

রাষ্ট্রের নাগরিকের এই মৌলিক চাহিদা পূরণে খলীফা বাধ্য। যদি খলীফা এই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হন, তবে তার জন্যে কঠোর সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন রাসূলুল্লাহ (সাঃ)। রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃসাবধান! তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেককেই তার দায়িত্ব সম্বন্ধে জবাবদিহি করতে হবে। ইমাম (খলীফা) যিনি সর্বসাধারণের উপর শাসক হিসেবে নিয়োজিত তিনিও দায়িত্বশীল, তাকেও তার দায়িত্ব সম্বন্ধে জবাবদিহি করতে হবে। মাকিল (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, এমন আমীর যার উপর মুসলিমদের শাসনভার অর্পিত হয় অথচ এরপর সে তাদের কল্যাণ সাধনে চেষ্টা না করে বা তাদের মঙ্গল কামনা না করে; ল্লাহ্ তাকে তাদের সাথে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন না।” (মুসলিম)

মৌলিক চাহিদা পূরণে পদক্ষেপসমূহঃ
মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য খিলাফত সরকার প্রাথমিকভাবে নিম্নলিখিত পদক্ষেপ গ্রহণ করবেঃ

সম্পদের অবাধ প্রবাহ
ইসলামী অর্থ ব্যবস্থা অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধানের প্রাথমিক উপায় হিসাবে প্রাপ্ত সম্পদের বন্টন ব্যবস্থাকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেয়। এক্ষেত্রে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার হুকুম হচ্ছেঃ

যাতে ধনৈশ্বর্য কেবল তোমাদের বিত্তশালীদের মধ্যেই পুঞ্জীভূত না হয়।” [সূরা আল-হাশরঃ ৭]

সুতরাং খিলাফত রাষ্ট্র সম্পদের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করবে।

কর্মসংস্থানের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরী
খিলাফত রাষ্ট্র প্রত্যেক সক্ষম নাগরিকের জন্য এমন একটি পরিবেশ তৈরী করবে যেখানে জীবিকার জন্য জনসাধারণ স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে। খিলাফত রাষ্ট্র জনসাধারণের জন্য চাষযোগ্য জমির ব্যবস্থা করবে এবং প্রয়োজনীয় অবকাঠামো তৈরী করবে। রাষ্ট্র এমন সব শিল্প স্থাপন করবে যেখানে স্থানীয় দক্ষ জনসাধারণের নিয়োগ দান করা হবে। জনসম্পদ উন্নয়নের জন্য খিলাফত রাষ্ট্র ক্রিয় পরিকল্পনা গ্রহণ করবে। খিলাফত রাষ্ট্র বিনিয়োগের সুযোগ ও পরিবেশ তৈরী করবে। ফলশ্রুতিতে অনেক কর্মসংস্থান ও সম্পদ সৃষ্টি হবে।

পারিবারিক দায়িত্বশীলতা আরোপ
খলীফা যখনই জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে কোন নাগরিকের দারিদ্রাবস্থার কথা অবহিত হবেন, তখনই তাঁর নির্বাহী কর্মকর্তা-কর্মচারীর মাধ্যমে ঐ নাগরিকের দায়িত্ব নিকটাত্মীয়দের কাছে হস্তান্তর করবেন। যদি নিকটাত্মীয়দের পাওয়া না যায় বা তাদের যথেষ্ট সম্পদ না থাকে তবে খলীফা অভাবী ব্যক্তির মৌলিক চাহিদা পূরণের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।

যাকাত সংগ্রহ ও বন্টন
খিলাফত সরকার যাকাত সংগ্রহ করে পবিত্র কুরআনে উল্লেখিত খাত অনুযায়ী বন্টন করবে। ইসলাম আল্লাহ্র (সুবহানাহু ওয়া তাআলা) দেয়া পবিত্র জীবনব্যবস্থা। সুতরাং ভ্যাট, ট্যাক্সের মত নিষ্ঠুর ব্যবস্থায় ইসলাম বিশ্বাস করে না। জনগণের উদ্বৃত্ত সম্পদের উপর ইসলামের একটি কর ব্যবস্থা রয়েছে। নিসাবের শর্তপূরণকারী ব্যক্তির অব্যবহৃত সম্পদের যাকাত মুসলমানরা তাদের আকীদা থেকে উৎসারিত ইবাদত মনে করে আদায় করে। এটি এমন একটি কর ব্যবস্থা যা সম্পদকে ধনীদের হাতে কুক্ষিগত করে না রেখে পুরো উম্মাহ্ মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া নিশ্চিত করে।

খাস জমি বিতরণ, ভূমি সংস্কার ও ভূমি পুনর্বন্টন
সারাদেশে জরিপ পরিচালনা করে ভূমি সংস্কার ও ভূমি পুনর্বন্টন করা হবে। এই ক্ষেত্রে খিলাফত রাষ্ট্র সম্পূর্ণ ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে নিম্নে লিখিত নিয়ম-কানুনসমূহ বাস্তবায়ন করবেঃ

ক. খাস জমি হিসেবে চিহ্নিত ভূমি খলীফা ঐ সমস্ত দরিদ্র অভাবী মানুষের মাঝে বিতরণ করবে, যারা এর সঠিক ব্যবহার করতে পারে। যেহেতু খারাজি ভূমির মালিকানা সম্পূর্ণরূপে রাষ্ট্রের, তাই খলীফা একে যেভাবে ইচ্ছা ব্যবহার করতে পারেন। আবার জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণ রাষ্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য হওয়াতে এসব ভূমি সঠিক বন্টনের মাধ্যমে জনগণের মৌলিক চাহিদাসমূহ রাষ্ট্র যথাযথভাবে পূরণ করবে।

খ. ভূমি মালিকদের হাতে অব্যবহৃত জমি এবং যা তারা সরাসরি ব্যবহার করে না, সেসব জমি খলীফা তাদের কাছ থেকে নিয়ে নিবেন। কোন জমি যদি তার মালিকের কাছে তিন বছর ধরে অব্যবহৃত পড়ে থাকে, তবে খলীফা সে জমি অধিগ্রহণ করবেন। যারা এই জমি ব্যবহার করতে সক্ষম, খলীফা সেসব দরিদ্র মানুষের কাছে বন্টন করে দিতে পারে। কৃষিভূমির বর্গা দেয়াও ইসলামের দৃষ্টিতে বৈধ নয়। মালিককে তার জমি হয় নিজে সরাসরি ব্যবহার করতে হবে অথবা নিজে ব্যবহার করা কিংবা বিক্রয় করার যোগ্যতা অর্জন করার আগ পর্যন্ত কাউকে তা ব্যবহার করার অনুমতি দিতে হবে। যদি তিন বছর পর্যন্ত সে এর কোনটিই করতে না পারে, তবে রাষ্ট্র তার কাছ থেকে সেটি নিয়ে নিতে পারে। এ ধরণের নিয়মনীতির বাস্তবায়ন ভূমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করবে।

উত্তরাধিকারীবিহীন মৃত ব্যক্তির রেখে যাওয়া সম্পদ অভাবীদের মাঝে বন্টন
উত্তরাধিকারীবিহীন মৃত ব্যক্তির সম্পদ রাষ্ট্রীয় সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হবে এবং খলীফা ঐ সমস্ত সম্পদের অধিগ্রহণ, ব্যয় ও বরাদ্দের সম্পূর্ণ অধিকার সংরক্ষণ করেন। জনগণের মৌলিক অধিকার পূরণের ফরয দায়িত্বের অংশ হিসাবে খলীফা যে কোন অভাবী ব্যক্তিকে তার প্রয়োজন পূরণের জন্য এ সম্পদ দান করতে পারেন।

সম্পদশালীদের উপর জরুরী কর আরোপ
রাষ্ট্র তার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টার পরও যদি সমাজে অভাবী জনগোষ্ঠী অবশিষ্ট থাকে  তবে সম্পূর্ণ উম্মাহর উপর তাদের মৌলিক প্রয়োজন পূরণের দায়িত্ব বর্তায়। বাইতুল মাল এ যদি রাষ্ট্রের নাগরিকদের মৌলিক চাহিদা পূরণের মত যথেষ্ঠ সম্পদ না থাকে, তবে খলীফা ধনীদের স্বাভাবিক ব্যয় ও প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ থেকে নিয়ে অভাবী মানুষের অভাব পূরণ করবেন।

জনগণের নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার প্রাপ্তির অধিকার
নিরাপত্তার অধিকার
খিলাফত ব্যবস্থা দেশের প্রতিটি নাগরিকের তথা মুসলিম-অমুসলিম, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলের জীবন, সম্পদ, সম্মান ও বিশ্বাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। ইসলামের দাবি অনুযায়ী সমগ্র দেশে এমন পরিবেশ সৃষ্টি করা হবে যেন দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে মানুষ সম্পূর্ণ নিশ্চিন্তে একাকী ভ্রমণ করতে পারে। রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিভাগকে প্রয়োজনীয় বাজেট, লোকবল, প্রশিক্ষণ ও আধুনিক উপকরণ দিয়ে শক্তিশালী করা হবে।

বিচার ব্যবস্থার কাঠামো
খলীফা একজন বিশ্বস্ত, যোগ্য ও ন্যায়পরায়ন বিচারককে প্রধান বিচারপতি বা কাযী-উল্-কুযাত নিয়োগ করবেন। প্রধান
বিচারপতি বিধি মোতাবেক নিমড়বলিখিত বিচারকদের নিয়োগ করবেনঃ

১. কাযী-উল্-খুসুমাত - কাযী উল খুসুমাত পারিবারিক আইন, চুক্তি আইন, ক্রিমিনাল আইন ইত্যাদি ব্যাপারে বিচারকার্য পরিচালনা করবেন।

২. কাযী-উল্-মুহতাসিব - কাযী উল মুহতাসিব ব্যবসা পরিদর্শক, অসামাজিক কার্যকলাপ বিরোধী পরিদর্শক, পরিবেশ ও স্বাস্থ্য পরিদর্শক তথা জনস্বার্থ দেখাশুনাকারী বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। কাযী-উল্-মুহতাসিবের রায় প্রদান করার জন্য কোন বিচারালয় প্রয়োজন হয় না। তিনি যেকোন সময়ে যেকোন জায়গায় অপরাধ সনাক্ত করতে পারলে সাথে সাথে সেখানেই রায় প্রদান করে তা পুলিশের সাহায্যে বাস্তবায়ন করতে পারেন।

৩. কাযী-উল্-মাযালিম - কাযী-উল-মাযালিম খলীফা থেকে শুরু করে শাসকগোষ্ঠীর যেকোন ব্যক্তির যে কোন ধরণের অন্যায় আচরণের ব্যাপারে আইনী কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারেন। তিনি বাদি ছাড়াই নিজে উদ্যোগী হয়ে রাষ্ট্রের যে কোন দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করে বিচারকার্য পরিচালনা করতে পারেন। খলীফার বিরুদ্ধে মামলা চলাকালীন সময়ে এই আদালতের বিচারককে পদচ্যুত করা যাবেনা।

বিচার প্রাপ্তির নিশ্চয়তা
পর্যায়ক্রমে কতগুলো সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপের মাধ্যমে সুষ্পষ্ট কিছু মূলনীতি বাস্তবায়ন করে খিলাফত রাষ্ট্রের বিচার ব্যবস্থা আইনের শাসন ও বিচার প্রাপ্তির নিশ্চয়তা বিধান করবে। খিলাফত রাষ্ট্রের বিচার ব্যবস্থার কতগুলো মূলনীতি নিম্নরূপঃ

১. সুস্পষ্ট ও ত্রুটিমুক্ত আইন-কানুন
২. নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ স্বাধীন
৩. নিরপেক্ষ বিচার প্রক্রিয়া
৪. বিচার ব্যবস্থার বিকেন্দ্রীকরণ
৫. দ্রুত, সহজলভ্য ও দূর্নীতিমুক্ত বিচার ব্যবস্থা

খিলাফত রাষ্ট্র প্রম দিন থেকেই শারীআহ্ অনুযায়ী বিচার বিভাগ নির্বাহী বিভাগ থেকে আলাদা করে দিবে। যেহেতু খিলাফত রাষ্ট্রে বিচার ব্যবস্থা স্বাধীন, সেহেতু বিচার বিভাগ জনগণের উপর ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে পারবে।

খিলাফত রাষ্ট্রের বিচার ব্যবস্থা হবে নিরপেক্ষ ও দুর্নীতিমুক্ত। বিচারকের অন্যায়ের ব্যাপারে ইসলাম কঠোর হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করেছে। এজন্য বিচারকগণ শারীআহ্র প্রত্যেকটি আইন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করবেন এবং পরিপূর্ণ দায়িত্ববোধ থেকে কর্তব্য পালন করবেন। ল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তাআলা বলেনঃ

হে ঈমানদারগণ! তোমরা ন্যায়ের উপর প্রতিষ্ঠিত থাক; আল্লাহর ওয়াস্তে ন্যায়সঙ্গত সাক্ষ্যদান কর, তাতে তোমাদের নিজের বা পিতা-মাতা অথবা নিকটবর্তী আত্মীয়-স্বজনের যদি ক্ষতি হয় তবুও। কেউ যদি ধনী কিংবা দরিদ্র হয়, তবে আল্লাহ্ তাদের শুভাকাঙ্খী তোমাদের চাইতে বেশী। অতএব, তোমরা বিচার করতে গিয়ে রিপুর কামনা-বাসনার অনুসরণ করো না। আর যদি তোমরা ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে বল কিংবা পাশ কাটিয়ে যাও, তবে আল্লাহ্ তোমাদের যাবতীয় কাজকর্ম সম্পর্কে অবগত।” [সূরা আন-নিসা : ১৩৫]

খিলাফত রাষ্ট্রের বিচার ব্যবস্থায় দীর্ঘসূত্রিতার কোন অবকাশ থাকবে না। নির্দিষ্ট অপরাধের জন্য নির্দিষ্ট আইন বিদ্যমান থাকায় দ্রুত বিচার কার্যক্রম এই শাসন ব্যবস্থার একটি গতিশীল দিক।

বিচার প্রাপ্তির নিশ্চয়তা বিধানের লক্ষ্যে খিলাফত রাষ্ট্রের বিচার ব্যবস্থা রাষ্ট্রের প্রান্তিক পর্যায় পর্যন্ত প্রতিটি নাগরিকের হাতের নাগালের মধ্যে নিয়ে যাওয়া হবে। তাকে বিচার প্রাপ্তির জন্য অযথা হয়রানিমূলকভাবে এদিক ওদিক ছোটাছুটি করে আর্থিক, শারীরিক ও মানসিক কষ্ট স্বীকার করতে হবে না। হযরত ওমর (রা.) মিসরের গভর্ণর আবু মুসা আশআরী (রা.) কে লেখা এক চিঠিতে কতগুলো ফরমান দিয়েছিলেন, তার একটি নিম্নরূপ; লোক সংখ্যা অনুপাতে যথেষ্ট পরিমাণে বিচারালয় ও বিচারকের ব্যবস্থা করতে হবে যাতে বিচার প্রার্থীগণকে অহেতুক হয়রানি হতে না হয়।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন