রবিবার, ৪ নভেম্বর, ২০১২

আল্লাহ্‌র উপর তাওয়াক্কুল/বিশ্বাসঃ পরিবর্তনের চাবিকাঠি

ডিসেম্বর ২০১০ থেকে, আমরা মুসলিম বিশ্বে একটি অকল্পনীয় পরিবর্তনের সাক্ষী হয়েছি। দশ লক্ষ লোক ভয়ঙ্কর অত্যাচারী শাসকদেরকে নির্বাসনে পাঠানোর রাস্তাকে বেছে নিয়েছে যারা নৃশংসতার সাথে দশকের পর দশক উম্মাহকে শাসন করেছে। এতে হাজার হাজার নিরীহ লোক শহীদ হয়েছে যাকে আরব বসন্ত  হিসেবে এখন উল্লেখ করা হয়। অতঃপর এই ত্যাগ শহীদদেরকে জান্নাতের বাগানে আল্লাহ্‌ সুবাহানাহুয়াতালার সঙ্গে একটি গৌরবজনক সাক্ষা্তের এর ব্যবস্থা করে দিয়েছে।  এই কঠিন সময়গুলিতে অনেকেই হয়ত গভীরভাবে চিন্তা করেছে যে, হয় তারা তাদের ঘর থেকে বাইরে বের হবে এবং এই শাসকদের গুড়িয়ে দিবে অথবা এই অত্যাচার সহজভাবে মেনে নিয়ে ঘরে বসে থাকবে।

সিরিয়াতে, মুসলমানরা দেখছে কিভাবে শিশুরা এবং নারীরা সি্রীয় অত্যাচারী শক্তিসমূহের দ্বারা শহীদ হচ্ছে। শহর এবং নগরী বোমার বৃষ্টির মধ্যে নিমজ্জিত হয়েছে, মহিলাদের অসম্মান এবং বৃদ্ধদের অপমান করা হচ্ছে। এই দৃশ্যগুলি ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছিল যেগুলো আমাদের মধ্যে ভীতির সঞ্চার করেছে যে “কিভাবে আমাদের ভাই এবং বোনেরা এই বিপদ থেকে মুক্তি পাবে”। ( https://www.youtube.com/watch?v=pkhwo-sPqGg)  এমনকি এই ভয়াবহ দৃশ্য দেখে আমাদের মধ্যে কট্টরপন্থিরাও কেপে উঠে। তাদেরকে আল্লাহ্‌ সুবাহানাহুয়াতালা যে কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন করেছেন তার মুল বিষয় হল, আল্লাহর উপর Tawakkul রাখার ক্ষেত্রে বিকল্প কোন OPTION নেই। তাওয়াক্কুলের গুরুত্ব বোঝার এখনই সময়।

তাওয়াক্কুল

আমাদের ভাই এবং বোনদের Tahrir Square থেকে Homs পর্যন্ত “আল্লাহু আকবার” স্লোগানের  প্রতিধ্বনি পরিষ্কার ভাবে আমাদেরকে জানিয়ে দিয়েছে যে আল্লাহর উপর তাদের বিশ্বাস, পরিপুর্ন tawakkul এবং তাঁর পরিকল্পনাসমূহে আত্মবিশ্বাস, সরকার উত’’খাতে জনগনকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে মূলভিত্তি হিসেবে কাজ করেছে। আল্লাহ বলেন:

অতঃপর যখন কোন কাজের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ফেলেন,তখন আল্লাহ তা’আলার উপর ভরসা করুন আল্লাহ তাওয়াক্কুল কারীদের ভালবাসেন।[TMQ 3:159]

সিরিয়া এবং অন্যান্য দেশের যে দৃশ্য গুলোতে আমরা সাক্ষী হয়েছি তা আমাদেরকে মনে করিয়ে দেয় কিভাবে Tawakkul অতীতে মুমিনদেরকে এই রকম বিপদজনক পরিস্থিতিতে সাহায্য করেছিল। আল্লাহ বলেন:

আপনার কোন কল্যাণ হলে তারা মন্দবোধ করে এবং কোন বিপদ উপস্থিত হলে তারা বলে, আমরা পূর্ব থেকেই নিজেদের কাজ সামলে নিয়েছি এবং ফিরে যায় উল্লসিত মনে। আপনি বলুন, আমাদের কাছে কিছুই পৌঁছবে না, কিন্তু যা আল্লাহ আমাদের জন্য রেখেছেন; তিনি আমাদের কার্যনির্বাহক। আল্লাহর উপরই মুমিনদের ভরসা করা উচিত। [TMQ 9:51]

তারা বলে, আমাদের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট; কতই না চমৎকার কামিয়াবীদানকারী।  [TMQ 3:173]

তাওয়াক্কুলের বিকল্প কিছু নেইঃ

যদি কেউ তাওয়াক্কুল অর্জনে ব্যর্থ হয় তাহলে এটা তাকে শিরকের গর্তে নিয়ে যাবে। “কেন আমরা??” “কেন আমাদের ক্ষেত্রে এই বিপদ আসল??” এমন প্রশ্ন শির্ক এর আলামত যেগুলো একজন ব্যক্তিকে ইসলাম থেকে দূরে সরিয়ে দিবে। প্রকৃত পক্ষে আল্লাহ্‌তালা হলেন,

আমাদের সৃষ্টিকর্তা এবং আমরা তার গোলাম। সবকিছুর জন্য আমরা আল্লাহ্‌র কাছে মুখাপেক্ষী কিন্তু আল্লাহ্‌তায়ালা আমাদের কাছে মুখাপেক্ষী নন। তার উপরে আমাদের Tawakkul থাকাটা তাঁর সাথে আমাদের অঙ্গীকার পূরণের অংশ।

আমাদেরকে অবশ্যই আমাদের কাজকর্ম ও আচার আচরন বিশ্লেষণ করে দেখতে হবে যে আমাদের মধ্যে তাওয়াককুল আছে কিনা। রাজনৈতিক ইস্যু গুলিও তাওয়াক্কুলের অন্তর্ভুক্ত; যেমন মুসলিমদের ভুমিতে শরিয়াহ এবং খিলাফাহ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা। আমাদের ক্ষতি হতে পারে বা আমরা আল্লাহ্‌র শত্রুর দ্বারা মারাও যেতে পারি, এমন ভয়ে কখোনই আমাদের দ্বীনের ব্যপারে COPROMISE করা যাবে না । উদাহরন স্বরূপ আমরা Arab Spring এর কথা বলতে পারি, রাজনৈতিক দলগুলো যারা সাম্প্রতিক কালে তিউনিসিয়া এবং মিশর এ নির্বাচিত হয়েছে তারা দাবী করেছে যে তারা শরীয়াহ বাস্তবায়ন করছে না তার কারণ তারা পুঁজিবাদী দেশগুলো থেকে যুদ্ধের হুমকি এবং প্রতিশোধের ভয়ে আছে। এই রকম মনোভাব, রসূল (সাঃ) এবং সাহাবী (রাঃ) দের ইসলামের পথ থেকে পু্রোপুরি বিপরীত। ঠিক এই রকম বিপদ গুলোতে, যেখানে আল্লাহ্‌র দ্বীনের জন্য দাঁড়াতে গেলে অবধারিত বিপদ থাকে অবশ্যই আল্লাহ্‌র উপর তাওয়াক্কুল থাকতে হবে। অতএব আদর্শ রাজনীতিবিদ যারা ক্ষমতা গ্রহন করেন বা করবেন তাদেরকে কোনভাবেই অ্যামেরিকা বা ক্ষমতাধর দেশগুলোকে ভয় পাওয়া যাবে না, ঠিক যেমনি ভাবে সাহাবীরা(রা) রোমান সম্রাজ্যকে ভয় পাননি যদিও রোমানরা সংখ্যা এবং সেনাবাহিনীর দিক থেকে তথকালীন সময়ে পরাশক্তি ছিল। অন্যভাবে বলতে গেলে বলতে হয় যেটা সাহাবীদেরকে(রা) সাহসী বানিয়েছিল সেটা হল আল্লাহর উপর ভরসা বা তাওয়াককুলঃ আল্লাহ্‌কে তারা(রা) ভয় পেতেন এবং তারা বুঝতে পেরেছিলেন যে আল্লাহ্‌র ইচ্ছা ছাড়া তাদেরকে কেউ কোন ক্ষতি করতে পারবে না।

তাওয়াক্কুল কারীদের জন্য সুসংবাদ

আবদুল্লাহ ইবন মাস’উদ (রা) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ(সা) বলেছেন, “আমি ধর্মীয় গোষ্ঠী উমামদের দেখলাম মাউসিমে(A Place) জড়ো হতে এবং লক্ষ্য করলাম যে আমার উম্মত দ্বারা সমতল ও পার্বত্য এলাকা পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। আমি তাদের সংখ্যা এবং অবস্থা দেখে বিস্মিত হলাম। আমাকে জিজ্ঞাসা করা হল, “তোমরা কি সন্তুষ্ট আছো?” আমি বললাম,“হ্যাঁ”। তারপর আমাকে বলা হলঃ “এদের সাথে আরও সত্তুর হাজার কোনরকম হিসাব ছাড়াই জান্নাতের বাগানে প্রবেশ করবে। তারা অগ্নি/আগুন নিয়ে খেলে না। তারা খারাপ লক্ষনের খোঁজ করে না। তারা প্রতারণা করেনা। তারা তাদের সম্পূর্ণ বিশ্বাস আল্লাহ্‌র উপর স্থাপন করে।” এ কথা শুনে, উকাশা ইবন মিহসান আল-আসাদি(রা) উঠে দাঁড়ালেন এবং বললেন, “হে রাসুল্লুলাহ, আপনি আল্লাহ্‌র কাছে আমার জন্য সুপারিশ করুন যাতে আমাকে এদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়।” তখন রাসুল্লাহু (সা) বললেন, “ও আল্লাহ্‌, তাঁকে এদের অন্তর্ভুক্ত করা হোক।” ঠিক তখনই আরেকজন লাফ দিয়ে উঠে বলল, “আপনি আল্লাহ্‌র কাছে আমার জন্য সুপারিশ করুন যাতে আমাকেও এদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়!” তার জবাবে তিনি (সা) বললেন, “উকাশা তোমার পূর্বে সেখানে আগমন করেছে!”[বুখারি]

আলেমদের মতামত

শেখ আব্দুল কাদের জিলানী (রহ.) তার বই “Al-Ghunya li-Talibin” (সত্য পথ অন্বেষীদের জন্য ব্যবস্থা) এ বলেন:  “তাওয়াক্কুলের প্রকৃত অর্থ[Haqiqa] একজন ব্যক্তির সমস্ত বিষয় আল্লাহর উপর ছেড়ে দিয়ে; অন্ধকারাচ্ছন্ন পথ, ব্যক্তিগত পছন্দ এবং নিজের দেখাশুনার যে বিষয় তা থেকে পরিত্রানের ব্যবস্থা করা এবং রণক্ষেত্রের দিকে এগিয়ে যাওয়া যেখানে নিয়তি এবং ভাগ্যের [taqdeer] পরীক্ষার সরাসরি অভিজ্ঞতা হয়।” আল্লাহ্‌র উপর বিশ্বাস স্থাপনকারী বান্দার জন্য এটা বিশ্বাস করা আবশ্যক যে ভাগ্যের কোন অংশের পরিবর্তনের কোন সম্ভাবনা নেই, এর মানে হল তাকে যেটাই বরাদ্দ করা হোক না কেন সে ওটাকে উপেক্ষা করতে পারবে না, তিনি কখনও পাবেন না যা তাকে বরাদ্দ করা হয় নি। যখন  তাঁর হৃদয় এতে পুর্নাঙ্গভাবে বিশ্বাস করবে, তখন তিনি তার প্রভুর প্রতিশ্রুতির উপর নির্ভর করার ব্যপারে আত্মবিশ্বাসী অনুভব করবে।

তাওয়াক্কুলের এই ধারণাটা কিছু ইসলামিক Movement এর নেতৃত্ব থেকেও পাওয়া যায়। যেমন মিশরের হাসান আল বান্না(রহ.), উম্মাহর পুনর্জাগরনের একজন অন্যতম নেতা, উম্মাহকে সতর্ক করে বলেছিলেন যে “উম্মাহর সত্য কথা বলার ক্ষেত্রে পুঁজিবাদী রাষ্ট্রগুলোর ভয়ে ভীত হওয়া উচিত নয়।”  তিনি বলেছেনঃ “খিলাফাহ ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়া সম্পর্কে প্রকাশ্যে বললে পশ্চিমারা ভীত হতে পারে, তাই তারা আমাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হবে। আমাদের তাদের সাথে কোন মিল নেই। এবং আমরা যদি এতে ভীত হয়ে তাদের সাথে মিলে যাই তাহলে এটা একটি অত্যন্ত দূষিত রাজনৈতিক মূল্যায়ন এবং রাজনৈতিক দূরদর্শিতার চরম দুর্বলতার প্রকাশ ঘটবে।”

অতএব যখন আমরা ইসলামের জন্য পা বাড়াবো তখন আল্লাহতালার উপর আমাদের বিশ্বাস থেকে আমাদের শক্তি অর্জন করা উচিত এবং আমাদের আত্মবিশ্বাসী হওয়া উচিত । এই বিশ্বাস এমন হওয়া উচিত যেন আমাদের (১)একটা চাকরী যেটা হারাম অর্থের সাথে সম্পৃক্ত তা প্রত্যাখ্যান করার অথবা (২)অত্যাচারী শাসকের পক্ষাবলম্বন থেকে সরে যাওয়ার সক্ষমতা বা মানসিক শক্তি থাকে। “আল্লাহ্‌ আমাদের রিযিক এবং এবং আমাদের আয়ুর নিয়ন্ত্রণকারী” এতে বিশ্বাস করা বা বুঝতে পারা এই দুইটা পরিস্থিতিতেই(১ ও ২) আমাদের ভয়কে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সহায়ক হবে যেন আমরা আমাদের সেই হারাম চাকরী বা অত্যাচারী শাসকের পক্ষাবলম্বন করা থেকে দূরে থাকতে পারি যদিও বা তাতে আমাদের মৃত্যু হয়।

রাসুল (সাঃ) এর উদাহরন

আমাদের প্রিয়তম নবী (সাঃ) পরিষ্কারভাবে আমাদেরকে দেখিয়েছেন কিভাবে বিশ্বাসীরা অবশ্যই তাদের পালনকর্তার উপর তাদের সম্পূর্ণ আস্থা স্থাপন করবে। ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্নিত, যখন আল্লাহ্‌র রাসুল(সা) তাহাজ্জুত নামাজের জন্য দাড়াতেন তিনি(সা) বলতেনঃ “হে আল্লাহ্‌ আমি আপনার কাছে আমার নিজেকে সমর্পন করলাম, আমি আপনাকে বিশ্বাস করি এবং আমি আপনার উপর আস্থা রাখি।”

রাসুল(সাঃ) এবং আবু বকর(রা) মদিনাতে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য যে হিজরত করেছিলেন তা ছিল মরুভুমিতে মৃত্যুর সাথে সাক্ষাত করতে যাওয়ার মত। কুরাইশরা রাসুল(সাঃ) এবং আবু বক্কর(রা) কে হত্যা করার জন্য সৈন্য পাঠিয়েছিল। যখন তারা একটি গুহায় আশ্রয় নিলেন, আবু বক্কর(রা) রাসুল(সাঃ) কে বললেন,“হে আল্লাহ্‌র রাসুল(সা), আমি মুশরিকদের পা দেখেছি। কাফেররা ঠিক আমাদের মাথার উপরে। হে আল্লাহ্‌র রাসুল(সা) যদি তারা তাদের পায়ের দিকে তাকায় তাহলে তারা আমাদেরকে দেখে ফেলবে।” রাসুল(সাঃ) বললেন, “হে আবু বকর দুইজনের সাথে তৃতীয় জন হচ্ছে আল্লাহ্‌ এখানে আপনি কিসের চিন্তা করেন  ?”

এই ঘটনা এটাই প্রকাশ করে যে আল্লাহ্‌র উপর রাসুল(সা) এর কতটা তাওাক্কুল ছিল, যদিও বিপদ ঠিক তাদের সামনে ছিল।

আজকে আমরা দেখতে পাচ্ছি কীভাবে আমাদের অনেক ভাই এবং বোনেরা সিরিয়ার রাস্তা গুলোতে শুধু মাত্র তাদের কন্ঠ এবং প্রতিবাদের মাধ্যমে শাসকদেরকে চ্যালেঞ্জ করছে। হোমস এর  ভিডিও ডকুমেন্টারিগুলোতে আমরা দেখছি আমাদের ভাই এবং বোনেরা তাদের তাওয়াক্কুলের উপর নির্ভর করে কীভাবে নিচের স্লোগান গুলো নিয়ে বিক্ষোভ করছে যে স্লোগান গুলো মুসলিমদের কোন আন্দোলনে অকল্পনীয় ছিল:
হে মুসলিম জনতা!! আরব লীগ, পর্যবেক্ষক দল, সিরিয়ান শাসক, আমেরিকা, ওবামা, সারকজি...সবাই শুনছে...... আপনারা সবাইকে শুনিয়ে দিন...... বিজয় কার কাছ থেকে আসবে ??? জনতার উত্তর- আল্লাহ!!!
হে উম্মাহর যুবকেরা!!! সারা বিশ্ব তোমাদের দেখবে... তাদেরকে বল... তোমরা কেউ কি ওবামার কাছ থেকে বিজয় নিবে??? From the Crowd- না!
এরদোগানের কাছ থেকে কেউ বিজয় নিবে??? From the Crowd- না!
তোমাদের মধ্যে যদি কেউ থেকে থাক যে কোন ব্যক্তি বা সংগঠন বা আরব লীগের কাছ থেকে বিজয় আশা করো, সে বিদায় নিতে পারো......
বিজয় কার কাছ থেকে আসবে??? From the Crowd- Allah!
বিজয় কার কাছ থেকে আসবে??? From the Crowd- Allah!
বিজয় কার কাছ থেকে আসবে??? From the Crowd- Allah!
[Crowd Recites Surat al-Nasr three times and proclaims three times:]

O Allah! We have none other than you...”
“হে আল্লাহ্‌ আপনি ছাড়া আমাদের কেউ নেই...”

(https://www.youtube.com/watch?v=y4STPzb2IDQ)

গৌরব আল্লাহ্‌র!
 অহংকার তো তাঁর যিনি আমাদেরকে এমন একটি ঘটনার সাক্ষী বানিয়েছেন যেটা আমাদের জন্য অনুসরনীয়! সিরিয়াতে আমাদের ভাই এবং বোনেরা খিলাফাহ প্রতিষ্ঠার ব্যপারে যে ধরনের দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে প্রকৃতপক্ষে মুসলিমদের রাজনৈতিক দল গুলোর যারা পুঁজিবাদী রাষ্ট্রগুলোকে ভয় পায় তাদেরকে এই রকম অবস্থানে যাওয়া উচিৎ। যদি হোমসের মুসলিমরা মৃত্যু, অত্যাচার এবং ধর্ষনের মুখোমুখি হয়েও অত্যাচারী শাসকদের বিরুদ্ধে সত্য কথা বলতে পারে তাহলে এই ধরনের অত্যাচারের বাইরে থেকেও আমরা বা অন্যান্য মুসলিমরা কি excuse দিবো ???  By Allah (swt), there is no excuse.

Do not lose hope

‘আল্লাহ্‌র উপর তাওয়াক্কুল’ ইসলামিক আকীদার একটি অংশ যা অবশ্যই পালন করতে হবে সুনির্দিষ্ট চিন্তা ও দলিলের ভিত্তিতে। এর মানে শরীয়াহর নীতি বিবেচনায় এবং আল্লাহ্‌র পরিকল্পনায় আস্থা রেখে তাওয়াক্কুল অর্জন করতে হবে।
আমাদেরকে সিরিয়ার এবং সারা বিশ্বের সকল মুসলিম যারা নির্যাতিত হচ্ছে (যেমন মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিমগণ, আসামের মুসলিমগন) তাদের জন্য আল্লাহ্‌র কাছে প্রাণ খুলে দোয়া করতে হবে যেন তাদের উপর আল্লাহ্‌র দয়ার বৃষ্টি বর্ষিত হয় এবং অত্যাচারী আসাদ বাহীনি এবং তাদের সহযোগী যারা আল্লাহ্‌র আলোকে নিভিয়ে দিতে চায় তাদের সকল ষড়যন্ত্র ধ্বংস হয়ে যায়। প্রকৃতপক্ষে একমাত্র আল্লাহ্‌ সুবাহানাহুয়াতালাই মুসলিমদেরকে এই পরীক্ষা থেকে মুক্তি দিতে পারেন। আল্লাহ্‌ সুবাহানাহুয়াতালা বলেন:

“তারা মুখের ফুঁৎকারে আল্লাহর আলো নিভিয়ে দিতে চায়। আল্লাহ তাঁর আলোকে পূর্ণরূপে বিকশিত করবেন যদিও কাফেররা তা অপছন্দ করে।” (As-Saff:8)

“যদি আল্লাহ তোমাদের সহায়তা করেন,তাহলে কেউ তোমাদের উপর পরাক্রান্ত হতে পারবে না। আর যদি তিনি তোমাদের সাহায্য না করেন, তবে এমন কে আছে,যে তোমাদের সাহায্য করতে পারে? আর আল্লাহর ওপরই মুসলমানগনের ভরসা করা উচিত।” [TMQ 3:160]

আমরা দোয়া করি যেন আল্লাহ্‌ সুবাহানাহুয়াতালা আমাদের ভাই এবং বোনরা যারা এই পরীক্ষাতে অবতীর্ন হয়েছে তাদেরকে এই বিপদের মুহুর্তে ইসলামের উপরে অবিচল থাকার তৌফিক দান করেন।আমীন। আনাস(রা) হতে বর্নিত রাসুল(সাঃ) বলেন:

“যে ব্যক্তি সমস্ত দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করে আল্লাহ্‌র পথে আন্তরিক হয়, আল্লাহ্‌র সাথে শিরক করে না, নামায কায়েম করে, যাকাত আদায় করে; সেই ব্যক্তি এই দুনিয়া ত্যাগ করবে আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টির উপর।” [ইবন মাজাহ]

আল্লাহ্‌ সুবাহানাহুয়াতালা আমাদেরকে তার দ্বীনের উপরে দৃঢ়ভাবে থাকার তৌফিক দান করুক এবং সেই সমস্ত ব্যক্তির অন্তর্ভুক্ত করুক যারা শুধুমাত্র তার উপরই ভরসা করে। আমীন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন