সোমবার, ১৯ মার্চ, ২০১২

বিভিন্ন দল, উপদল ও দেশে বিভক্ত হওয়ার কারণে মুসলিম বিশ্বের ঐক্য নিতান্তই অসম্ভব

(নিম্নোক্ত প্রবন্ধটি আদনান খান রচিত “Geopolitical Myths” বইটির বাংলা অনুবাদের একাংশ হতে গৃহীত)

অনেকে শিয়া সুন্নীর বিভক্তিকে সামনে এনে এটা প্রতিষ্ঠিত করতে চান যে আধুনিক বিশ্বে এক মুসলিম উম্মাহর ধারণা আর বাস্তবসম্মত নয়। যদিও মুসলিমদের ইতিহাস ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিভক্তির পরও ঐক্যের ইতিহাস। আজকাল নতুন নতুন সীমানার মধ্যেই মুসলমানদের ঐক্য গড়ে উঠেছে। মুসলিম উম্মাহর ইসলামিক ধারণাটি বহু শতাব্দির পুরোনো একটি ধারণা হিসেবে বিবেচিত হয়। শতাব্দীকাল আগে ইসলামিক ধারণার মত মুসলিম বিশ্বে ঐক্য ছিল। বর্তমান বিভক্তির কারণে অনেকেই ধর্মনিরপেক্ষতাকে বিভেদ নিরসনের একমাত্র উপায় বলে মনে করছেন এবং খিলাফতের মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের ধারণাকে তাত্ত্বিক একটি বিষয় বলে জ্ঞান করছেন।

এখন আলোচনার বিষয় হচ্ছে ইসলাম কিভাবে বিভক্তিকে দেখে? কিভাবে এত দল, উপদল, জাতিতে বিভক্ত পৃথিবীতে একটি বৈশ্বিক ইসলামিক রাষ্ট্রের ধারণা সম্ভব হতে পারে?

এটি বুঝতে হলে আমাদেরকে প্রথমেই জানতে হবে যে, মুসলিম জাতিই একমাত্র জাতি নয় যাদের মধ্যে এমন ভিন্নতা রয়েছে। ১৮৬১ সালে আমেরিকার ইউনাইটেড স্ট্যাটস অব আমেরিকা এবং কনফেডারেট স্ট্যাটস অব আমেরিকার মধ্যে জাতিগত বিভক্তির কারণে এক রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধ হয়। ১৮৬০ সালে আব্রাহাম লিংকন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবার পর এগারটি দক্ষিণাঞ্চলীয় রাষ্ট্র ইউনিয়ন থেকে আলাদা হয়ে যেতে চায়। ২০১৩ সালের মধ্যে ব্রিটেন থেকে স্কটল্যান্ড এর পৃথক স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আবির্ভূত হবার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। আলোচিত দুটি সংকটের সময়ই কেউ ঐক্য গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ধর্মনিরপেক্ষতার সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেনি। গৃহযুদ্ধকে মার্কিন স্কুল সমূহের পাঠ্যবইয়ে ইতিহাসের একটি গুরুত্বপুর্ণ অংশ হিসেবে পড়ানো হয়।

বিভিন্ন মানুষ, রীতিনীতি, সংস্কৃতি, ভাষা, চিন্তার কাছে ইসলাম অপরিচিত কিছু নয়। যখন ইসলামিক শাসন বিস্তৃতি লাভ করছিল তখন বিভিন্ন চিন্তা ও মূল্যবোধের লোকেরা ইসলামিক রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবেই পরিগণিত হচ্ছিল। আব্বাসীয় খিলাফতের শাসনামলে ইসলাম এমন সব ভূমিতে পৌঁছে যায় যেখানে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের সাথে ইসলামী চিন্তাবিদ ও পন্ডিত ব্যক্তিদের দ্বন্দ্ব শুরু হয়। আর এই দ্বন্দ্বের কারণেই ইসলামিক আক্বীদার উপর পড়াশোনা করতে গিয়ে যৌক্তিক বিজ্ঞানের উদ্ভব ঘটে। ইসলামিক বিশ্বাসসমূহকে সাধারণ চিন্তা ও প্রমাণের মাধ্যমে মানুষের কাছে পৌঁছে দেবার জন্য এ শাখার গোড়াপত্তন হয়। এ বিষয়টি পড়ে আরও অনেক উপশাখায় বিভক্ত হয়ে পড়ে। নতুন নতুন ভূমি জয় করবার পর এ বিষয়টি আরও সমৃদ্ধ হতে থাকে। সেকারণে অনেক মুসলমান এ বিষয়ে গবেষণা, শিক্ষালাভ, বিজ্ঞানচর্চায় নিজেদেরকে উজাড় করে দিতে থাকে। রাষ্ট্রের ভেতর একটি বহুমুখী ইসলামিক সংস্কৃতির উদ্ভদ ঘটে বিধায় মুসলিমরা খিলাফতকে শক্তিশালী করবার জন্য এ ব্যাপারে জ্ঞানলাভে আগ্রহী হয়ে উঠে। প্রত্যেক বুদ্ধিজীবী - তিনি যে সংস্কৃতির উপরই পারদর্শীতা লাভ করুক না কেন; প্রত্যেক লেখক - যে সাহিত্য ধারায় তিনি উদ্বুদ্ধ হন না কেন; প্রত্যেক গণিতবিদ, বিজ্ঞানী, শিল্পী এ সংঘাতের কারণেই সব সময় ইসলামী বিষয় নিয়ে বিতর্ক করেছেন ও যুক্তি উপস্থাপন করেছেন।

এ কারণে মতামতের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরণের দল, উপদল ও ভিন্নতা দেখা দেয়-যাদের মধ্যে হাতেগোনা সামান্য কয়েকটি ইসলামিক পরিসরের বাইরে চলে যায়। যদিও চিন্তার এ ভিন্নতার কারণে মুসলিম উম্মাহ কখনওই বিভক্ত ছিল না। বরং আব্বাসীয় খিলাফতকালে বাগদাদ ছিল বুদ্ধিবৃত্তিক ও বৈপ্লবিক চিন্তার পীঠস্থান। বিভিন্ন চিন্তা ও দর্শনের ব্যক্তিদের বিতর্ককে স্বাগত জানানো হত। এভাবে ইসলাম সম্পর্কে একটি স্ফটিকস্বচ্ছ ধারণা গড়ে উঠে। কেননা ইসলাম বিভিন্ন  চিন্তার বিপরীতে নিজের অবস্থানে দাঁড়িয়ে শক্তিশালী অবস্থান নিতে পারে। সেকারণে চিন্তার ভিত্তিতে বিভিন্ন দল, উপদলের উপস্থিতি সমস্যা সৃষ্টির বদলে ইসলামকে আরও ভালভাবে বুঝার পথকে সুগম করেছে।

মুসলিম বিশ্বে বর্তমান বিভক্তি দুটি ইস্যুর কারণে জন্ম নিয়েছে। প্রথমটি হল ইসলাম সম্পকের্  অজ্ঞানতা এবং দ্বিতীয়টি ইউনিভার্সিটি অব শিকাগোর অর্থনৈতিক ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ডেভিড ফ্রমকিন তুলে ধরেছেন। তিনি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মুসলিমরা ঔপনিবেশিক শোষণ থেকে বেরিয়ে এসেছে। তার মতে, ‘সাবেক ওসমানিয়া খিলাফতের অধিকাংশ সম্পদই এখন বিজয়ীদের দখলে। কিন্তু এটা সবার মনে রাখা উচিত মুসলিমরা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে খ্রীস্টান অধ্যুষিত ইউরোপকে পদানত করতে চেয়েছে। আর বর্তমানে বিজয়ী পশ্চিমা শক্তি সবসময় চেয়েছে তাদের স্বার্থের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে মুসলিম উম্মাহ যাতে আর কখনওই ঐক্যবদ্ধ না হতে পারে। শতকের পর শতকের ব্যবসায়িক অভিজ্ঞতার আলোকে ব্রিটেন এবং ফ্রান্স ক্ষুদ্র অস্থিতিশীল রাষ্ট্র জন্ম দিয়েছে যাদের শাসকেরা ক্ষমতায় থাকবার জন্য পশ্চিমাদের উপর নির্ভরশীল। ঐসব দেশের উন্নয়ন এবং বাণিজ্যকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে এবং তারা কখনওই পশ্চিমাদের জন্য হুমকি হতে পারবে না। এই বহিঃশক্তিসমূহ পুতুল শাসকগুলোর সাথে আরবের সম্পদসমূহ সস্তায় ক্রয় করবার জন্য চুক্তি করেছে। অধিকাংশ জনগণ কে দরিদ্রতার অতল গহবরে নিক্ষেপ করে শাসকগোষ্ঠীকে ব্যাপক সম্পদশালী করা হয়েছে।

ইউরোপীয় উপনিবেশবাদীরা ক্ষুদ্র অস্থিতিশীল রাষ্ট্র তৈরির মাধ্যমে মুসলিম বিশ্বকে বিভক্ত করার পরিকল্পনা সচেতনভাবেই করেছে যাতে করে তারা পুনরায় একত্রিত হতে না পারে। প্রথম মহাযুদ্ধের আগে ব্রিটেন এবং ফ্রান্স মধ্যপ্রাচ্যকে নিজেদের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা করে নিয়েছে। কাগজের মানচিত্রের উপরে তারা পেন্সিল দিয়ে সীমানা এঁকে জর্ডান, সিরিয়া, সৌদি আরব, কুয়েত, ইরাক এবং ইরানকে তৈরি করেছে। শত শত বছর ধরে একত্রে বসবাস করে আসা জনগণকে বিভক্ত করে পাকিস্তান, ভারত ও আফগানিস্তান সৃষ্টি করা হয়েছে। এই ঊপনিবেশিক নীতি বর্তমানে অসংখ্য সমস্যার জন্ম দিয়েছে। প্রত্যেক জাতির জন্য বৃটেন ও ফ্রান্সের প্রতি অনুগত শাসক নিযুক্ত করা হয়। হিজাজ অঞ্চলের নেতৃত্ব পাবার তাগিদে সৌদ পরিবার ওসমানিয়া খিলাফতকে ধ্বংসের জন্য বৃটিশদের সাথে একত্রে কাজ করে। মুসলমানেরা বর্তমানে পৃথিবীকে এইসব কৃত্রিম সীমারেখাগুলোকে দিয়ে দেখে। ঊপনিবেশিক শাসকগোষ্ঠী মুসলমানদেরকে বিভিন্ন রাষ্ট্র গঠন করে দিয়ে বাহ্যিকভাবে বিভক্ত করে ফেলে। তারপর জাতীয় পতাকা, জাতীয় স্বাধীনতা দিবস এবং জাতীয় পতাকার ভিত্তিতে মুসলিমরা যাতে আর কখনওই একত্রিত হওয়ার ব্যাপারে চিন্তা করতে না পারে সে ব্যবস্থা করে।

পূর্বে  উম্মাহ একত্রিত হয়েছিল ইসলামের ভিত্তিতেই-যা মুসলিম ভূমিসমূহে সমৃদ্ধ সমাজ বিনির্মাণ করেছিল। সেকারণে ইসলামের অনুপস্থিতি ও ইউরোপীয় ঔপনিবেশিকদের ষড়যন্ত্রের কারণেই একসময়কার ঐক্যবদ্ধ মুসলিম উম্মাহ আজ ৫০ টির ও বেশী ক্ষুদ্র অকার্যকর রাষ্ট্রে বিভক্ত হয়ে পড়েছে।

ইসলামের কারণে এ বিভক্তি তৈরি হয়নি বরং ইসলাম না থাকার কারণেই আজকের অনৈক্যের সৃষ্টি। এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ হল পশ্চিমা বিশ্ব সুন্নী এবং শিয়া সমস্যা নিরসনের জন্য ধর্মনিরপেক্ষতাকে সমাধান হিসেবে নিয়ে এসেছে। বিরোধপূর্ণ দুটি দলের মধ্যে এ ধরণের সমাধানের প্রস্তাব নিতান্তই অপ্রাসঙ্গিক। কেননা ধর্মনিরপেক্ষতার সমাধান সমস্যাটিকে সামষ্টিকভাবে সমাধানের বদলে ব্যক্তিপর্যায়ে নিয়ে এসেছে। মহানবী মুহম্মদ (সা.) এর উম্মতের যে কোন সমস্যা সমাধানের জন্য ইসলামের প্রামাণ্য দলিলের কাছে আমাদেরকে আসতে হবে। মুহম্মদ (সা.) এর পরিবারে বিপক্ষে কিছু মুসলমানের অবস্থান কিংবা মুয়াবিয়া (রা.) কিছু কর্মকান্ড কখনই ইসলামিক সমাধান কিংবা বিচারব্যবস্থার প্রামান্য দলিল হতে পারে না। এখানে সূত্র হচ্ছে কোরআন এবং হাদীস। আর এর ব্যাখ্যায় মতানৈক্য থাকতে পারে-যা যে কোন রায়ের ক্ষেত্রে হয়ে থাকে। যদিও ব্যাখ্যা দেবার কিছু সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়া রয়েছে।

বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে আসা সমাধানের ক্ষেত্রে যে কোন আদর্শের মধ্যেই মতানৈক্য দেখা দিতে পারে। গণতান্ত্রিক দেশসমূহে ব্যাখ্যার ভিন্নতার দরূন চিন্তার অনেক শাখা-প্রশাখা রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন ডেমোক্রেট এবং রিপাবলিকানরা রয়েছে। যুক্তরাজ্যে রয়েছে লেবার, লিবারেল ডেমোক্রেট এবং কনজারভেটিভরা। পশ্চিমা বিশ্বে আরও রয়েছে নিউকনজারভেটিভ, লির্বাটেরিয়ানস, ফেবিয়ানস, ইনভারোমেন্টালিস্ট এবং খ্রীস্টান ডেমোক্রেটস। তারা সকলেই পুঁজিবাদের আক্বীদা ধর্মনিরপেক্ষতাকে ভিত্তি হিসেবে নিয়ে কতটুকু উদার হবে এই বিতর্কে মতানৈক্য পোষণ করে। মনেটারিস্টদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে ক্যানসিয়ান স্কুল অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সরকারের হস্তক্ষেপের পক্ষে অবস্থান নেয়। যারা সমাজতান্ত্রিক বিশ্বাসের উপর অটুট রয়েছে তাদেরও অনেকগুলো শাখা রয়েছে। সমাজতন্ত্রের পক্ষ শক্তি পুঁজিবাদের মালিকানার স্বাধীনতাধারণার ফলে সৃষ্ট সম্পদের ব্যাপক বৈষম্যকে সকল সমস্যার মূল বলে চিহ্নিত করে এর সমাধান করতে হবে বলে সিদ্ধান্তে উপনীত হয়। একটি চিন্তার অনুসারীদের (কমিউনিস্ট চিন্তাধারার) মতে, ব্যক্তিপর্যায়ের মালিকানা সম্পণূর্ রূপে পরিহার করে সবক্ষেত্রে বাস্তবসম্মত সাম্যতা নিশ্চিতই সবচেয়ে যুগপত সমাধান। অন্য চিন্তার অনুসারীদের (এগ্রেরিয়ান স্যোসালিস্টদের) মতে, কেবলমাত্র কৃষিজমির জন্য ব্যক্তিপর্যায়ের মালিকানা নিষিদ্ধ করতে হবে। তখন তৃতীয় একটি চিন্তার উন্মেষ ঘটে যাকে বলা হয় স্টেট স্যোসালিজম-যার মূল কথা হল ব্যক্তিমালিকানা থেকে জনস্বার্থের গণমালিকানা সর্বক্ষেত্রে সুনিশ্চিত করতে হবে।

পশ্চিমে অনেক পন্ডিত ও গবেষকগণ শিয়া সুন্নী বিভক্তির বিষয়ে গবেষণা করে দেখিয়েছেন যে, এক উম্মাহর ধারণাকে হেয় করবার জন্য এ সমস্যার উদ্ভব ঘটানো হয়েছে। তবে এ ধরণের কর্মকান্ড মুসলিম উম্মাহর ভেতরে এক ধরনের পরিবর্তনের সূচনা করেছে - যা মুসলিম বিশ্বে একটি শক্তিশালী দাবী হিসেবে ত্বরান্বিত হচ্ছে।

আমরা এখন দেখতে পাচ্ছি পুরো বিশ্বে মুসলিম উম্মাহ একত্রে পুঁজিবাদ ও ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদকে প্রত্যাখ্যান করছে। এমনকি প্যালেস্টাইনের মুসলিমরা দীর্ঘদিন অবৈধ দখলদারিত্বের অধীনের থাকবার পরও ইরাক, আফগানিস্তানের মুসলমানদের প্রতি একাত্মতা ও সংহতি প্রকাশের জন্য রাস্তায় নেমে এসেছে। উম্মাহ একটি দেহের মত বিক্ষোভে ফেটে পড়ে যখন মত প্রকাশের স্বাধীনতার নামে মহানবী (সা.) এর ব্যাঙ্গাত্মক কার্টুন (নায়ুজুবিল্লাহ) ইউরোপে প্রকাশ করা হয়।

উম্মাহ পরিষ্কার বুঝতে পারছে যে, দালাল শাসকগুলো কোনভাবেই তাদের প্রতিনিধিত করছে না। প্রসারিত পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চল এখন উম্মাহ এবং শাসকদের মাঝামাঝি রয়েছে। দীর্ঘদিন অধঃপতিত থাকায় এখন উম্মাহ একসময়কার ঐক্যের কথা ভাবতে পারছে না।

আদর্শের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠা একটি সরকারের অন্তর্গত সমাজ সবসময় ঐক্য সৃষ্টি করে এবং নিশ্চিত করে। সাহাবীরা খারিজিদের সাথে খুব কঠোর আচরণ করেছিলেন যখন তারা ইসলামের মধ্যে নতুন কিছু আমদানি করবার মাধ্যমে অনৈক্য সৃষ্টির পাঁয়তারা করে। খিলাফতের প্রত্যাবর্তন এখন অতি নিকটে এবং এ ব্যাপারে অনেক বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিবর্গ ও সি.আই. এর মত জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থাসমূহের ভবিষ্যদ্বাণী রয়েছে। একটি রাষ্ট্র ছাড়া ঐক্য নিতান্তই অসম্ভব। কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা ছাড়া উত্তর আমেরিকায় আমরা দুটি রাষ্ট্র দেখতে পেতাম। সরকারী কাঠামো না থাকলে ইংল্যান্ড এবং স্কটল্যান্ডের মধ্যে ঐক্য থাকত না। রাষ্ট্র জনগণের মাঝে ঐক্য সৃষ্টি করে। এটা ছাড়া ঐক্য একেবারেই অসম্ভব। ইসলামী ইতিহাস থেকে আমরা জানতে পারি যে, এ ব্যবস্থায় ঐক্য সৃষ্টির জন্য বিশদ প্রক্রিয়া রয়েছে এবং বিভিন্ন পরিচয় থেকে আসা লোকদের মাঝে সফলভাবে ঐক্য সৃষ্টি করা হয়েছিল। বর্তমানে যে অনৈক্য দেখি তা পশ্চিমাদের সৃষ্টি এবং ক্রমাগতভাবে এ প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন